টাকা মিলছে না। তাই দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে পুরুলিয়া ইন্ডোর স্টেডিয়ামের। কবে অর্থ মিলবে জানে না জেলা প্রশাসনও। এই অবস্থায় অসমাপ্ত আউটডোর ষ্টেডিয়াম মাঠ হিসেবেই খেলাধুলার কাজে লাগুক এই ইচ্ছা থেকেই অসম্পূর্ণ ইন্ডোর স্টেডিয়ামটিকে স্পোর্টস অ্যাকাডেমি হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে আগের সরকার সিদ্ধান্ত নেয় পুরুলিয়াতে ইন্ডোর স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হবে। মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠের এক পাশে পাঁচ হাজার দর্শক আসন বিশিষ্ট এই ইন্ডোর স্টেডিয়াম গড়ে তোলার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল সাড়ে ১০ কোটি টাকা। ওই বছর অগস্ট মাসে তৎকালীন ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী পুরুলিয়ায় এসে এই ইন্ডোর স্টেডিয়ামের শিলান্যাস করেছিলেন। একাধিক বার এই স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য দরপত্র ডাকা হলেও একটি সংস্থা ছাড়া অন্য কোনও সংস্থা এগিয়ে না আসায় নির্মাণ কাজ শুরুই করা যায়নি। |
শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন মহলের হস্তক্ষেপে ২০০৯ সালে কাজ শুরু হয়। জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহ জানান, রাজ্য সরকার এবং সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল থেকে মোট সাড়ে তিন কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু তার পরে আর অর্থ পাওয়া যায়নি। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে জেলা প্রশাসনের হাতেই রয়েছে এই স্টেডিয়াম নির্মাণের দেখভালের দায়িত্ব। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলাশাসক অর্থের জন্য বিভিন্ন মহলে দরবার করলেও কোনও মহল থেকে ইতিবাচক সাড়া পাননি। এ দিকে স্টেডিয়াম নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন না তুললেও স্টেডিয়ামের স্থান নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি। তিনি বলেন, “এতবড় একটি প্রকল্প, অথচ বাইরে পার্কিং জোন কোথায়? যে মাঠের একপাশে এই ইন্ডোর স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হচ্ছে সেই মাঠই শহরের প্রধান মাঠ। বড় বড় স্পোর্টস ইভেন্ট এই মাঠেই হয়। সেই মাঠটাও ছোট হয়ে গেল।” তাঁর বক্তব্য, “তবে কাজ এতদূর এগিয়ে গিয়েছে পিছিয়ে আসা তো যায় না। বর্তমান ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র যখন এখানে এসেছিলেন, তখন আমরাও তাঁকে এ বিষয়ে অনুরোধ করেছি।” বামফ্রন্ট সরকার যখন এই প্রকল্প গড়ে তোলার কাজে হাত দেয় তখন মানভূম ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কৃষ্ণপদ বিশ্বাস। এখনও তিনি ওই পদেই বহাল রয়েছেন। কৃষ্ণপদবাবু বলেন, “প্রশাসনই প্রথম থেকে এই প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে। আমরা নিজে থেকেই কাজ দেখাশোনা করতাম। যেহেতু আমাদের মাঠেই এই স্টেডিয়াম গড়ে উঠছে টাকা নেই বলে কাজ আটকে রয়েছে।”
তিনি জানান, ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র যখন এখানে এসেছিলেন তখন তাঁরাও বিষয়টি নিয়ে অনুরোধ করেছিলেন। জেলাশাসক বলেন, “এই খোলা স্টেডিয়ামটিকে আপাতত স্পোর্টস অ্যাকাডেমি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমি ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনকে চিঠি লিখেছি। মাঠের উন্নয়ন, খেলোয়াড়দের থাকা, খাওয়ার জায়গা-সহ অ্যাকাডেমি গড়ে তুলতে ন্যূনতম যে পরিকাঠামোর প্রয়োজন তা জানিয়ে শিল্প দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এই পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য পাঁচ কোটি টাকা প্রয়োজন। প্রকল্পের বিবরণ ওই দফতরের কাছে পাঠানো হয়েছে।” |