ডেভিস কাপে ‘নতুন ভারত’-এর অভিষেক ঘটছে আজ শুক্রবার। যখন চণ্ডীগড় টেনিস স্টেডিয়ামের হার্ডকোর্টে য়ুকি ভামব্রি, বিষ্ণু বর্ধন, দ্বিবীজ শরণ এবং সনম সিংহ (টিমের গড় বয়স ২৩) নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। এশীয় আঞ্চলিক এক নম্বর গ্রুপে টিকে থাকার ম্যাচ। হারলে পরের মাসে চিনা তাইপের বিরুদ্ধে শেষ সুযোগ পাওয়া যাবে, আঞ্চলিক গ্রুপেও দ্বিতীয় সারিতে নেমে যাওয়ার লজ্জা আটকানোর। ভারতের দলগত টেনিসের এহেন করুণ দশার থেকেও অবশ্য বেশি তাৎপর্যের, ১৮ বছরের মধ্যে এই মাত্র দ্বিতীয় বার লি-হেশ ছাড়া ভারত ডেভিস কাপ খেলছে। যাঁদের জুটির ডেভিস কাপের ইতিহাসে দীর্ঘতম অপরাজিত থাকার বিশ্বরেকর্ড (টানা ২৩ ম্যাচ) রয়েছে। লিয়েন্ডার আমেরিকায় বিশ্ব টিম টেনিসে (ডব্লিউটিটি) সেরেনাদের টিমমেট হিসেবে ওয়াশিংটন ক্যাসেলসের জার্সিতে ফাইনাল খেলার জন্য চণ্ডীগড়ে দেশের জার্সিতে নেই। মহেশ অলিম্পিক-বিতর্কে ফেডারেশনের অলিখিত শাস্তির কোপে পড়েছেন। রোহন বোপান্নাও তাই। সোমদেব দেববর্মনের ফিটনেস নিয়ে এখনও নির্বাচকেরা দ্বিধায়। |
এই অবস্থায় তরুণ ভারতের প্রথম সিঙ্গলসে য়ুকি খেলবেন বিপক্ষের দ্বিতীয় সেরা প্লেয়ার টার্নারের সঙ্গে। দ্বিতীয় সিঙ্গলসে নিউজিল্যান্ডের এক নম্বর স্ট্যাথামের মুখোমুখি বিষ্ণু। শনিবার ডাবলসে দেশের একমাত্র প্রথম সারির বাঁহাতি টেনিস প্লেয়ার দ্বিবীজ সঙ্গী হবেন বিষ্ণুর। রবিবার রিজার্ভ সিঙ্গলস। যার অর্থ, তিন দিনই অলিম্পিয়ান বিষ্ণুকে খেলানোর সাহস দেখাচ্ছেন ভারতীয় দলের প্রবীণ নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন শিবপ্রকাশ মিশ্র। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রতিপক্ষ কিউয়িরা অনেক পিছিয়ে থাকলেও ডেভিস কাপে যুযুধান প্লেয়ারদের র্যাঙ্কিং কোনও কালেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। তা হলেও বর্তমান জাতীয় চ্যাম্পিয়ন শাকেত মিনেনিকে শেষ মুহূর্তে রিজার্ভে পাঠিয়ে দ্বিবীজকে মূল দলে ঢোকানোর পিছনে টাটকা ফর্মের পাশপাশি র্যাঙ্কিংও। গত মাসেই বিষ্ণু এবং য়ুকির পার্টনার হিসেবে সাংহাই ও ব্যাঙ্ককে এটিপি চ্যালেঞ্জার্স ট্রফি জিতেছেন দ্বিবীজ এবং এই মুহূর্তে ডাবলসের বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে লি-হেশ ও বোপান্না ছাড়া প্রথম একশোয় থাকা একমাত্র ভারতীয় তিনিই।
দু’দেশের ডেভিস কাপে ছ’বারের সাক্ষাতের ফল ৩-৩ এবং আট বছর আগে শেষ টাইয়ে লিয়েন্ডারের তিন দিনই (সিঙ্গলস-ডাবলস) জয়ের দাক্ষিণ্যে ভারত কোনওক্রমে ৩-২ হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। ফলে নতুন ভারতের সামনেও চ্যালেঞ্জ। যাদের স্ট্র্যাটেজি থাকছে, রবিবার টাই ২-২ দাঁড়ালে চূড়ান্ত সিঙ্গলসে ‘ফ্রেস লেগ’ সনম সিংহকে খেলানো। স্থানীয় তরুণের পিছনে চণ্ডীগড়ের গ্যালারিও তখন থাকবে। “আমি খুশি ড্রয়ে,” বলে ভারতের নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন যোগ করেছেন, “ডেভিস কাপে শেষ দিনের জন্য দলে একজন একদম তাজা প্লেয়ার বাঁচিয়ে রাখা খুব দরকার। সনম আমাদের সেই প্লেয়ার থাকছে।” ডেভিস কাপের নিয়ম মতো রিভার্স সিঙ্গলসে দলের অধিনায়ক কোনও ম্যাচের এক ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সেই নির্দিষ্ট ম্যাচের প্লেয়ার পাল্টাতে পারেন। আপাতত ড্রয়ের বাইরে থাকতে হলেও সনম আদৌ হতাশ নন। বলেছেন, “এই দলে আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের পিছনে আছি। য়ুকি, বিষ্ণুকে সিঙ্গলসে সাহায্য করছি। দরকার হলেই নামব।” য়ুকি আবার বলছেন, “প্রথম সিঙ্গলস ডেভিস কাপে সব সময় কঠিন। তবে আমি খুশি যে প্রথম ম্যাচটা খেলার সুযোগ পাচ্ছি। যদিও সেটা কঠিন হবে বলে আমার ধারণা।” দ্বিবীজের এই টাইয়েই ডেভিস কাপে আত্মপ্রকাশ ঘটছে। বলেছেন, “দারুণ উত্তেজিত বোধ করছি। ছোটবেলা থেকে ডেভিস কাপ দেখতে দেখতেই তো টেনিস প্লেয়ার হয়ে উঠেছি। দেশের জন্য সেরাটা দেওয়াই হবে আমার কাজ।” |