ফেড কাপে রবিন সিংহের খেলা নিয়ে হঠাৎই ধোঁয়াশা। রবিন নিজে বলছেন, “কাঁধের চোট পুরোপুরি সারেনি। যা অবস্থা তাতে ফেড কাপে মনে হচ্ছে যেতে পারব না।” রবিনের চিকিৎসা চলছে ক্লাবের সহ-সচিব এবং ডাক্তার শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্তের তত্ত্বাবধানে। তিনি আবার বলছেন, “রবিনের ব্যথা কমলেই খেলতে পারবে। হাতে এখনও একটা সপ্তাহ রয়েছে। রবিনের প্রথম ম্যাচ থেকে খেলার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।” লাল-হলুদ কর্তারা অবশ্য পুরো ব্যাপারটি ছেড়ে দিচ্ছেন কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের উপর। ক্লাবের অন্যতম প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “শুনেছি রবিন টিমে আছে। তবে দল গড়ার ব্যাপারে কোচই শেষ কথা। উনিই এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।” |
গত শনিবার যুবভারতীতে ভেস্তে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল-বিএনআর ম্যাচে খেলতে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়েছিলেন রবিন। লাল-হলুদের সহ সচিব শান্তিরঞ্জনবাবু বললেন, “রবিনের চোট লেগেছে কাঁধের লিগামেন্টের অ্যাক্রোমোনিয়াম ক্ল্যাভিকুলার (এসি) জয়েন্টে। ওষুধ, ফিজিওথেরাপি চলছে। ব্যথা যাতে দ্রুত কমে যায়, সে জন্য ‘শোল্ডার সাপোর্ট’ দেওয়া হয়েছে। এর চেয়েও খারাপ অবস্থায় আশিয়ান কাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচে মাইক ওকোরো খেলেছিল। তবে এটা পুরোপুরি নির্ভর করে ওই ফুটবলারের মানসিকতার ওপর। তবে হাতে সময় আছে। ফেড কাপে রবিন নেই এটা এখনও বলার সময় আসেনি।”
লাল-হলুদ কোচ অবশ্য রবিনকে পাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা হলেও সংশয়ে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার অনুশীলনের পর রবিনের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বললেন, “শুক্রবার ডাক্তার দেখানোর পর রবিন এবং ভাসুমের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।” তবে কথা বলে মনে হল রবিন এবং ভাসুমকে ধরেই আপাতত লাল-হলুদ কোচ ফেড কাপের ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। আক্রমণভাগে চিডির সঙ্গী হিসাবে রবিনই প্রথম পছন্দ কোচের।
ফরোয়ার্ডে চিডির সঙ্গী হিসাবে রবিনকে একান্তই না পাওয়া গেলে মর্গ্যানের হাতে তিন বিকল্প অবশ্য আছে--- বলজিৎ, মননদীপ এবং লেন। এর মধ্যে চলতি মরসুমে গোলের মধ্যে রয়েছেন বলজিৎ। তিন ম্যাচে দু’টি হ্যাটট্রিক-সহ আট গোল করেছেন সমর্থকদের আদরের ‘বলজু’। কোচও উচ্ছ্বসিত বলজিৎকে নিয়ে। বলছেন, “গত মরসুমে ছেলেটার ফোকাস একটু নড়ে গিয়েছিল। মনোবিদের কাছে পাঠানোর পর ওর আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।” মনোবিদ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “এই মরসুমের শুরুতে ওকে বলেছিলাম ব্যথর্তা ভুলে যাও। পুরো দলকে নিজের ঘাড়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা কর। গোল পাওয়ায় সেই দায়িত্ববোধ এখন বলজিতের খেলায় পাওয়া যাচ্ছে।”
তিন ম্যাচে ১৩ গোল লাল-হলুদের। মাঝমাঠে ঝলমল করছেন সঞ্জু-মেহতাব-পেনরা। বলজিৎ এবং সফল মাঝমাঠ যদি লাল-হলুদের ‘ফিল গুড ফ্যাক্টর’ হয় তা হলে প্রদীপের তলায় অন্ধকারও রয়েছে। তা হল রক্ষণ। দল এখনও প্রিমিয়ার লিগে কোনও গোল হজম করেনি ঠিক। তবে আর্মি একাদশ ম্যাচে রালেংকে সামলাতে গিয়ে শক্তিপ্রয়োগ করতে হয়েছে ওপারাকে। এ দিন, অনুশীলনের পর মেহতাবকে বলতে শোনা গিয়েছে, “দল বড় ব্যবধানে জিতছে। কিন্তু বেশ কিছু ত্রুটিও ধরা পড়েছে। দ্রুত এই ত্রুটিগুলো সারিয়ে তুলতে হবে।” |
এরই মাঝে রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে শিলিগুড়ির মাঠ। কাঞ্চনজঙ্ঘাতে এক দিনে দু’টি করে খেলা। বৃষ্টি হলে মাঠ অসমান হয়ে যাবে। তখন যুবভারতীর অ্যাস্ট্রোটার্ফ পেন-মেহতাবরা যে পাসিং ফুটবল খেলে বিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে দেন তা সম্ভব নাও হতে পারে। এই ব্যাপারটা ভাবাচ্ছে মর্গ্যানের দলকে। শুক্রবার বিকেলে পৈলানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ। সেখান থেকেই এইসব ‘নেই ফ্যাক্টর’ খুঁজতে শুরু করবেন মেহতবরা।
তবে সবার আগে দরকার রবিন সিংহ-র মাঠে নামার ‘সবুজ সঙ্কেত’। আপাতত সেই সঙ্কেতের অপেক্ষায় পুরো ইস্টবেঙ্গল শিবির। |