নিজস্ব সংবাদদাতা • চন্দননগর |
স্নাতক স্তরে ভর্তির দাবিতে বুধবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চন্দননগর খলিসানি কলেজে অধ্যক্ষের ঘরের বাইরে অবস্থানে বসেন শতাধিক ছেলেমেয়ে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অবস্থান চলছে। আন্দোলনকারীরা অবশ্য অধ্যক্ষকে আটকাননি। বুধরাত রাতেই অধ্যক্ষ বাড়িতে চলে যান। অসুস্থ থাকায় বৃহস্পতিবার তিনি কলেজে আসেননি। প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুলাই অধ্যক্ষের বদলি রুখতে বিক্ষোভ হয় এই কলেজে। তাতে সামিল হয়েছিলেন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মীরাও।
কলেজ সূত্রের খবর, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এই কলেজে কাউন্সেলিংয়ের শেষ দিন ছিল ৩০ অগস্ট। ভর্তি নেওয়া হয় ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ৩টি বিভাগে ৪৬৩ জনকে ভর্তি নেওয়া হয়। (আসন সংখ্যা ছিল ৩৬৩। এ বার ১০০টি আসন বাড়ানো হয়।) স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় অনেকেই ভর্তি হতে পারেননি। ভর্তি না হতে পারা পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েন। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে আবেদন-নিবেদন করেন তাঁরা। কিন্তু ফল না হওয়ায় অধ্যক্ষের ঘরের সামনে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন ১০৯ জন পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে ৭০ জনই ছাত্রী। |
বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ অবস্থান শুরু হয়। রাত ৮টা নাগাদ অধ্যক্ষ নেপঙ্কর হাজরা বাড়িতে ফিরে যান। ছেলেমেয়েরা অবশ্য সেখান থেকে নড়েননি। কলেজ সূত্রে জানানো হয়েছে, আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মধ্যে ৪২ জন কাউন্সেলিংয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। এমনিতেই এ বার ১০০ আসন বাড়ানো হয়েছে। তার পরেও পরিস্থিতির বিষয়ে নেপঙ্করবাবু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। অধ্যক্ষ বলেন, “আরও ৫২ জনকে ভর্তি নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু তার থেকে বেশি ভর্তি নেওয়া আমাদের পক্ষে কী ভাবে সম্ভব?” আন্দোলনকারীদের অবশ্য দাবি, ১০৯ জনকেই ভর্তি নিতে হবে। তাঁদের বক্তব্য, “ভর্তি না হতে পারলে একটা বছর নষ্ট হবে। পরের বছর ভর্তি হওয়া যাবে, এমন নিশ্চয়তাও নেই। ফলে, অনেক পিছিয়ে পড়ব। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কিছু একটা ব্যবস্থা করুক।” ছেলেমেয়েদের এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। অরুনাংশু দে নামে এক অভিভাবক বলেন, “সকলেই তো উচ্চ মাধ্যমিকে পাস করেছে। তারা কেন পড়তে পারবে না? সরকার সমাধান করুক।”
টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদও ওই ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনকে সমর্থন করছে। অবস্থান বিক্ষোভেও টিএমসিপি-র ছেলেরা থাকছেন। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক টিঙ্কু শর্মা বলেন, “অতিরিক্ত ৫২ জনকে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু, বাকিদেরও ভর্তি নেওয়া দরকার। না হলে ভবিষ্যতে ওদের সমস্যা হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকার সহানুভূতির সঙ্গে ওদের কথা বিবেচনা করুক।” |