নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া |
বুদ্ধবাবুর কর্মিসভায় দলের কর্মী-সমর্থকদের ‘অভব্যতা’ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় হুগলির আরামবাগের দলের নেতাদের ‘সতর্ক’ করল তৃণমূল।
রবিবার ওই কর্মিসভাকে ঘিরে চূড়ান্ত ‘বিশৃঙ্খলা’র অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, দলের নেতাদের একাংশও তাতে ‘উস্কানি’ দেন। এর পরেই চলতি সপ্তাহে চুঁচুড়ায় দলের জেলা কার্যালয়ে আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন ব্লকের নেতাদের ডেকে পাঠান তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। সেখানে মূলত আরামবাগ শহরের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে চূড়ান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেন দলীয় নেতৃত্ব। অন্যদেরও ‘কড়া বার্তা’ দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আরামবাগে দলের ঢিলেঢালা সংগঠনকে বাগে আনতে তাঁদের পরামর্শ দেয় দল। তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই ওই নেতাদের ডেকে পাঠানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত, কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব। |
গত রবিবার বুদ্ধবাবুর সভার বাইরে বিশৃঙ্খলা। —ফাইল চিত্র। |
এই ব্যাপারে জেলা বা রাজ্য নেতৃত্ব সরাসরি মুখ খুলতে চাননি। দলের এক রাজ্য নেতা বলেন, “প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কর্মিসভার অনুমতি এবং তার পরে সভার দিনে আমাদের কিছু কর্মী-সমর্থকের আচরণ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। এক দিকে, উচ্ছৃঙ্খল কর্মীদের সামলাতে পুলিশি ব্যর্থতা, পাশাপাশি দলীয় নেতাদের একাংশের উস্কানিমূলক আচরণে ওই দিন যে কোনও মূহূর্তে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারত। আর সিপিএম তা রাজ্যব্যাপী প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত।” আরামবাগের নেতাদের মধ্যে বৈঠকে ছিলেন বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা, স্বপন নন্দী, জয়দেব জানা, আতাউল হক, মনোরঞ্জন পাল প্রমূখ।
আগামী রবিবার রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের আরামবাগ বয়েজ স্কুল মাঠে সভা করার কথা। বৈঠকে ওই সভা নিয়েও আলোচনা করা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই দিন আরামবাগ-তারকেশ্বর রেলপথের বিদ্যুদয়নের সূচনা করবেন রেলমন্ত্রী। তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য অনুযায়ী, রেল লাইনে বিদ্যুদয়নের সূচনা করে এক দিকে যেমন আরামবাগের মানুষের কাছে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে, পাশাপাশি বুদ্ধবাবুর সভার পাল্টা হিসেবে ওই সভাকে জোরদার করে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। বৃহস্পতিবার দিলীপবাবু সভাস্থলে গিয়ে প্রস্ততি নিয়ে আলোচনা করেন দলের নেতাদের সঙ্গে।
বস্তুত, প্রাক্তন সাংসদ অনিল বসুকে বহিষ্কারের পরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে আরামবাগে সিপিএম আরও বেশি কোণঠাসা। সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক-সহ অন্য বামপন্থী দলের সংগঠনও রীতিমতো নড়বড়ে। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে এই পরিস্থিতি তৃণমূল হাতছাড়া করতে চাইছে না। তাই, রেলমন্ত্রীর সভাকে সামনে রেখে কার্যত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তে চলেছে আরামবাগে। |