এপিএল-বিপিএল ভাগ না করে, সবার জন্য সস্তায় খাদ্য চাই। এই দাবিতেই আজ উত্তাল হয়ে উঠল ত্রিপুরা। রাজ্যে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতরের সামনে বামফ্রন্টের ডাকে চার দফা দাবিতে বাম সমর্থক-কর্মীরা আজ দু’ ঘণ্টার গণ-অবস্থান করল। ত্রিপুরার সব মহকুমা ও জেলা সদরে, মোট প্রায় ৩০টি জায়গায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন অফিসের সামনে এই গণ-বিক্ষোভ সংগঠিত হয় বলে বামফ্রন্টের পক্ষে জানানো হয়েছে। চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ২ টাকা কেজি দরে দেশের মানুষকে ৩৫ কেজি চাল সরবরাহ করতে হবে। গণবন্টন ব্যবস্থা সর্বজনীন করতে হবে। বিপিএল চিহ্নিতকরণে যে মানদণ্ড কেন্দ্র তৈরি করেছে তা বাতিল করতে হবে। গরিব মানুষকে খাদ্যশস্যের বদলে নগদ অর্থ প্রদানের প্রস্তাব বাতিল করতে হবে।
কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের সমালোচনা করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার গত লোকসভা ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, দরিদ্র মানুষকে ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হবে। সেই প্রতিশ্রুতি তারা রাখেনি। উল্টে এখন এমন এক ‘খাদ্য নিরাপত্তা বিল’ কেন্দ্র আনতে চাইছে, যার ফলে দরিদ্র মানুষের পক্ষে খাদ্য সংগ্রহ করাই কঠিন হয়ে পড়বে।’’ আগরতলায় আকাশবাণীর উত্তর গেটের সামনে আয়োজিত ধরনা-মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের সাংসদ খগেন দাস, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রশান্ত কাপালি, ফরওয়ার্ড ব্লকের সমর রায় প্রমুখ বামপন্থী নেতা। প্রত্যেকেই দেশের মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়ার প্রশ্নে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের ‘চরম উদাসীনতার’ কথা উল্লেখ করেন। তাঁদের অভিযোগ, এফসিআইয়ের খাদ্যগুদামে খাদ্যশস্য উপচে পড়ছে। অথচ দরিদ্র ভারতবাসীকে তা না দিয়ে নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। বিদেশে পশুখাদ্য হিসেবে সেটা রফতানি করা হচ্ছে। গণবন্টন ব্যবস্থাকে সর্বজনীন করার জন্য যেটুকু ভর্তুকি দেওয়া জরুরি, সেটা কেন্দ্রীয় সরকার দিতে নারাজ। সংসদে কার্যকর খাদ্য নিরাপত্তা বিল আনার জন্য বামপন্থী দলগুলি আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ধরনার মঞ্চ থেকে বামফ্রন্ট নেতারা ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, গতকাল ত্রিপুরা বাদে দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বামপন্থীরা ‘খাদ্য নিরাপত্তা দিবস’ পালন করেছে। গত কাল রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেসের বিক্ষোভ কর্মসূচি থাকায়, রাজ্য বামফ্রন্ট আজ ‘খাদ্য নিরাপত্তা দিবস’ পালন করল। |