খুনের মামলা যখন আদালতে ঝুলছে, তখন অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই অভিযুক্তকে অপহরণের অভিযোগ উঠল। পুলিশ অপহরণের মামলা নথিভুক্ত করে তদন্তে নেমেছে। তবে তারাও খানিকটা বিভ্রাম্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় ছয় দুষ্কৃতী করিমগঞ্জ জেলার পুরাহুরিয়া গ্রামে হানা দিয়ে এমাদউদ্দিন নামে ৩০ বছরের এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে তার মা রুকিয়া বেগম পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমাদের মায়ের বক্তব্য: অপহরণকারীরা দু’লক্ষ টাকা মুক্তিপণও দাবি করেছে। টাকা না পেলে এমাদকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে তারা। অপহরণকারী দলের ছ’জনের মধ্যে তিন জনকে তিনি চিনতে পেরেছেন বলে মহিলার দাবি। পুলিশকে তিনি জানান, এই তিন জন হল—সুতারকান্দির আব্দুল আহাদ চৌধুরী, তার ভাই নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং জারুয়ার মকদ্দস আলি।
উলিলেখযোগ্য বিষয়টি হল: অপহরণের অভিযোগে অভিযুক্ত আব্দুল আহাদ চৌধুরীর পাঁচ বছরের মেয়ে গত বছর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আর এই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল এমাদউদ্দিনকে। তিন মাস জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পায় সে। সেই হত্যা মামলা এখনও বিচারাধীন। তবে জেল থেকে বেরিয়ে এ বছরের ১০ জানুয়ারি সে রিট পিটিশনের মাধ্যমে হাইকোর্টকে জানায়, আহাদের শিশুকন্যার মৃত্যু তার মনে অনুশোচনার জন্ম দিয়েছে। সে সমস্ত ধরনের অপরাধ থেকে দূরে থাকতে চায়। আসলে শিশুটি নয়, বন্দুক তাক করা হয়েছিল আহাদের দিকে। সে তখন চুরি, ডাকাতি, খুন-সহ নানা অপরাধে জড়িতদের দীর্ঘ তালিকাও হাইকোর্টকে জানায়। এমাদ অভিযোগ করেছিল, পুলিশ সুপার, বিধায়কদের মতো বড় বড় মানুষও অপরাধ চক্র থেকে মাসোহারা নেয়।
এর কয়েক দিন পরই জাল নোট রাখার অভিযোগে ধরা পড়ে এমাদ। ফের জামিনে ছাড়া পায় সে। সেই এমাদকেই রবিবার আব্দুল আহাদ তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর মায়ের। আহাদ অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, হত্যা মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই এখন অপহৃত হওয়ার নাটক করছে এমাদ। করিমগঞ্জ থানার ওসি নীহাররঞ্জন নাথ বলেন, তাঁরা এই অভিযোগের তদন্ত করে দেখছেন। খতিয়ে দেখা হচ্ছে অভিযোগের সত্যাসত্য। |