কন্দহর বিমান ছিনতাই-কাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন চক্রী মেহরাজুদ্দিন ওয়ানিকে গ্রেফতার করল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। এ দিন কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলা থেকে মেহরাজুদ্দিন ওরফে জাভেদ দান্দকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের সন্দেহ, ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ভারতীয় এয়ারলাইন্সের আইসি-৮১৪ বিমানটিকে যারা ছিনতাই করে, সেই পাঁচ জঙ্গিকে বিমানে ওঠার ভুয়ো কাগজপত্র জুগিয়েছিল এই মেহরাজুদ্দিন। পুলিশ সূত্রে খবর, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শীঘ্রই জম্মু ও কাশ্মীরে আসতে পারেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র অফিসাররা।
প্রায় তেরো বছর আগের কন্দহর বিমান ছিনতাই-কাণ্ডে ১৭৬ জন বিমানযাত্রীর মধ্যে বাকিরা জীবিত ফিরলেও ফেরেননি রুপিন কাটিয়াল। তাঁকে খুন করে জঙ্গিরা। বাকি যাত্রীদের প্রাণের বিনিময়ে তিন জন জঙ্গিকে মুক্তি দেয় ভারত। পুলিশের দাবি, এ সবের নেপথ্যেই ছিল মেহরাজুদ্দিন। পুলিশের সন্দেহ, সে দিন জঙ্গিদের বিমানে চড়ার ‘ব্যবস্থা’ করে দিয়েছিল মেহরাজুদ্দিনই।
|
মেহরাজুদ্দিন ওয়ানি |
তবে কন্দহর বিমান ছিনতাই ছাড়াও ভারতে আরও নানা নাশকতামূলক কার্যকলাপে মেহরাজুদ্দিনের নাম বারবার উঠে এসেছে বলে দাবি পুলিশের। যেমন ১৯৯৬ সালে দিল্লির লাজপত নগরে যে বিস্ফোরণ হয়েছিল, তাতেও অন্যতম অভিযুক্ত ছিল মেহরাজুদ্দিন। এমনকী, ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল প্রধান সৈয়দ সালাহুদ্দিন এবং দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের। উল্লেখ্য, যে কুড়ি জন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধীর নামের তালিকা পাকিস্তানকে দিয়েছিল ভারত, তাদের মধ্যে অন্যতম দু’জন এই সালাহুদ্দিন এবং দাউদ ইব্রাহিম। পুলিশের সন্দেহ, এই সালাহুদ্দিনের সঙ্গেই পাক কাশ্মীরে ১৯৮৯ সাল নাগাদ অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিল মেহরাজুদ্দিন। তার পর সালাহুদ্দিন-মেহরাজুদ্দিন ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় বলে ধারণা একাংশের। কোনও নির্দিষ্ট জঙ্গি সংগঠন নয়, ইসলামিক ফ্রন্ট, মুসলিম মুজাহিদিন থেকে শুরু করে হিজবুল মুজাহিদিনের মতো একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কাজ করার ‘অভিজ্ঞতা’ রয়েছে মেহরাজুদ্দিনের। সেই কাজের সূত্রে ভারতে একাধিক গোপন আস্তানাও তৈরি করে সে।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় মেহরাজুদ্দিন জানিয়েছে, কন্দহর-কাণ্ডের নেপথ্যে নেপালের কোনও বিদেশি দূতাবাসের কূটনীতিকেরও হাত ছিল। পরে তাঁর সঙ্গেই নেপাল থেকে ভারতে বেআইনি অস্ত্র পাচারের কাজে যুক্ত হয় মেহরাজুদ্দিন। গত ক’বছর যাবৎ নেপালেই হিন্দু নাম নিয়ে বসবাস করছিল সে। এমনকী, বিয়েও করে এক হিন্দুকে। পুলিশের দাবি, সম্প্রতি অসুস্থতার জন্য জম্মু ও কাশ্মীরে এসেছিল সে। সেই সুযোগেই তাকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। |