শরিক দলের কাছ থেকে বাধা পাওয়ার আশঙ্কা এখনও রয়েছে। কিন্তু তার পরেও বিমান পরিষেবায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির শর্ত শিথিল করার জন্য কাল মন্ত্রিসভার অর্থ বিষয়ক কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব আনছে সরকার।
বিমান পরিষেবায় ৪৯ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির ব্যবস্থা বর্তমানে রয়েছে। কিন্তু কোনও বিদেশি বিমান পরিষেবা সংস্থাকে সেই বিনিয়োগের অনুমতি এত দিন দেওয়া হয়নি। বিমান মন্ত্রকের প্রস্তাব, এ বার বিদেশি বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলিকে ঘরোয়া বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রে ৪৯ শতাংশ লগ্নির জন্য অনুমতি দেওয়া হোক।
কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে আগেই আপত্তি জানিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে ফরওয়ার্ড ট্রেডিং চুক্তি সংক্রান্ত আইন মন্ত্রিসভার আলোচ্যসূচিতে রেখেও ঠিক যে ভাবে সরকারকে সম্প্রতি পিছু হটতে হয়েছিল, কাল সে রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে এই বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহের তৎপরতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে তাঁর অসন্তোষের কথাও জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার কাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতে পারেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়।
তবে সরকারের এক শীর্ষ নেতা বলেন, বিমান পরিষেবার প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নিতে ছাড়পত্রের ব্যাপারে তৃণমূল খুব বেশি আপত্তি করবে না। মমতার সম্মতি আদায়ের জন্য কিছু দিন আগে কলকাতায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন অজিত। শরিক নেত্রীকে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন, কেন্দ্র এই আর্থিক সংস্কারের পথে না হাঁটলে ঘরোয়া বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি আর্থিক ভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। মন্ত্রিসভার ওই কংগ্রেস সদস্যের দাবি, যে হেতু তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারে বিমান পরিষেবায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নিতে আপত্তি করা হয়নি। তাই শেষমেষ কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে তৃণমূল বাধা দেবে না।
দেশের অধিকাংশ বিমান পরিষেবা সংস্থা এ ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানাচ্ছে। তার পুরোধা কিংফিশার। বিমান মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, গত মাসে ঘরোয়া বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি লাভের মুখই দেখেনি। কিংফিশার বহু রুটে পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার পর কয়েকটি সংস্থা সামান্য মুনাফা করেছে। কিন্তু বিমান পরিষেবা ক্ষেত্র চাঙ্গা করতে গেলে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ জরুরি।
শরিকি বাধা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত কাল এই নীতিতে মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে তা আর্থিক সংস্কারের লক্ষ্যে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই বিবেচিত হবে। |