‘দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী রিজার্ভার প্রজেক্ট’-কে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে বন দফতরের সঙ্গে ‘জমি জট’ কাটাতে উদ্যোগী হল রাজ্যের সেচ ও জলপথ বিভাগ। আজ, বৃহস্পতিবার মহাকরণের রোটান্ডায় বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করবেন সেচ ও জলপথ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাঁকুড়া জেলার ১২ জন বিধায়ককে। থাকবেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক এবং বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিএফও-রা।
মানসবাবু বুধবার বলেন, “বাঁকুড়ার অ-সেচ এলাকাগুলিতে সেচের জল পৌঁছতে এই প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরীর উৎসস্থল এবং ওই দু’টি নদীর সংযোগস্থলে জলাধার গড়তে চাই। তবে তা গড়তে বন দফতরের ২০৬ হেক্টর জমি আমাদের নিতে হবে।” বন দফতর সূত্রের খবর, প্রকল্পটির জন্য ইতিমধ্যেই ‘কেন্দ্রীয় জল কমিশন’-এর কাছে ছাড়পত্রের আবেদন করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেই ছাড়পত্র মিলে যাবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের সেচ ও জলপথ বিভাগের এক আধিকারিক। |
সমস্যা বন দফতরের জমি নিয়ে। ওই আধিকারিক জানান, বন দফতরের কাছ থেকে যে পরিমাণ জমি নেওয়া হচ্ছে, তা কী ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, মূলত তা নিয়েই জট পেকেছে। তিনি বলেন, “বন দফতরকে ২০৬ হেক্টর জমি পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তবে প্রতিটি পর্যায়ে ন্যূনতম ১০ হেক্টর জমি থাকতে হবে বলে দাবি করেছে বন দফতর। প্রতিটি পর্যায়ে ১০ হেক্টর জমি দেওয়াটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারের কাছে।” মানসবাবুর কথায়, “এই সমস্যা কী ভাবে মিটবে, তা নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হবে। আশা করা যায়, সকলে মিলে একটা সমাধান বের করতে পারব।”
এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা বর্ধমানের সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বারকেশ্বর নদের উৎসস্থল পুরুলিয়ার সিঁদুরপুর পাহাড় সংলগ্ন এলাকায়। আর গন্ধেশ্বরী নদীর উৎসস্থল শালতোড়ার মুরলু। দুই নদীর সংযোগস্থল বাঁকুড়া শহর লাগোয়া দোমোহানি। ছাতনার শুখনিবাস, চামকাড়া ও ওন্দার প্রতাপপুরে একটি করে জলাধার গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই জলাধারগুলি থেকে ক্যানালের মাধ্যমে জল পাঠানো হবে বাঁকুড়া-১, বাঁকুড়া -২, ছাতনা, ওন্দা, বিষ্ণুপুর ও পাত্রসায়ের ব্লকের মোট ৪১৯টি মৌজায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর এলাকার জল পাওয়ার কথা।
ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) এস কুনাল ডেইভাল বলেন, “দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী প্রকল্প নিয়ে মহাকরণে বৈঠক হবে। জমি সমস্যা নিয়ে সেখানে কথা হবে।” এই প্রকল্পটি বাঁকুড়ার প্রয়াত বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্রের স্বপ্ন ছিল। বাঁকুড়ার বর্তমান বিধায়ক, কাশীবাবুর স্ত্রী মিনতি মিশ্র বলেন, “এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ওঁর স্বপ্ন পূরণ হবে। সরকার বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে। আশা করা যায় দ্রুত এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।” |