ভোট-দামামা ত্রিপুরায়
মমতাকে সামনে রেখে জোট গড়ার দাবি
ত্রিপুরায় এখনও ভিত গড়তে পারেনি তৃণমূল। পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, পুরসভা, বিধানসভা কোথাও কোনও প্রতিনিধি নেই তাদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিধানসভা ভোটের মুখে সমস্ত জল্পনা-কল্পনা সেই তৃণমূলকে ঘিরেই। বা বলা ভাল, আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন এক ও অদ্বিতীয়া মমতা বন্দোপাধ্যায়। শাসক, বিরোধী সব পক্ষই আগ্রহভরে তাকিয়ে, ত্রিপুরার আগামী নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার জোট হচ্ছে কি না। নেতাদের সুরে তারতম্য ঘটলেও দুই দলের সাধারণ কর্মীদের সিংহভাগই মিলেমিশে বামফ্রন্ট হঠানোর পক্ষে।
আপাত দৃষ্টিতে, তৃণমূলের এতে লাভ ছাড়া লোকসানের আশঙ্কা নেই। কিন্তু কংগ্রেসের ব্লক বা জেলা পর্যায়ের নেতারা কেন রাজ্যে তাদের ‘দলছুট’দের নিয়ে এত আগ্রহী? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতারই বক্তব্য: তৃণমূল নয়, তাঁদের লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিলে ত্রিপুরায় বাম-বিরোধী ‘হাওয়া’ বদলে যাবে ‘ঝড়ে’। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য মমতা ত্রিপুরার বাম-বিরোধী মানুষের কাছে এখন সংগ্রামের প্রতীক। ‘মমতা ফ্যাক্টর’ নিয়ে খানিকটা অস্বস্তিতে রাজ্যের বাম নেতারাও।
নীচের স্তরে বাম-বিরোধী জোটের পক্ষে সওয়াল শুরু হলেও প্রদেশ স্তরের নেতারা কী ভাবছেন? এ জায়গায় দু’টি দলের দুই প্রধানের গলায় ভিন্ন সুর। তৃণমূলে রাজ্য সভাপতি মানিক দেব স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের আগ্রহ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তাঁর কথায়, “এর আগেও নির্বাচনে তৃণমূলের পক্ষ থেকে মহাজোটের কথা বলা হয়েছিল। কংগ্রেস কোনও বারই জবাব দেওয়ার সৌজন্যটুকু দেখায়নি। এ বারও অবশ্য মহাজোটের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৬০টি আসনে একা লড়াইয়ের জন্যও আমরা তৈরি হচ্ছি।” মানিকবাবুর কটাক্ষ, ‘‘শেষ পর্যন্ত সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের গোপন বোঝাপড়া হয়ে গেলে তৃণমূল সব কেন্দ্রেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।’’ আর আঁতাঁত হলে তাঁরা ২০টি আসন চাইবেন বলেও জানান তিনি।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুদীপ রায়বর্মনের বক্তব্য, “কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হবে কি না তা নিয়ে সনিয়া গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেবেন।” তবে এটি যে পশ্চিমবঙ্গ নয়, সে কথাও মাথায় রাখতে তিনি মানিকবাবুদের পরামর্শ দেন। অর্থাৎ কংগ্রেস এখানে বড় শরিক। সুদীপবাবুর বক্তব্য, “আসন চাওয়ার সময় যেন তৃণমূল নেতৃত্ব বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করেন।” পশ্চিমবঙ্গে ছোট শরিক কংগ্রেস যে ত্যাগ স্বীকার করছে, তা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
বামফ্রন্ট তথা সিপিএম নেতৃত্ব কী ভাবছেন? সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির মুখপাত্র গৌতম দাসের মতে, পশ্চিমবঙ্গের ‘পরিবর্তন’ ত্রিপুরায় বাম-কর্মীদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের মনে এক বছর আগে থেকেই সরকার টিকিয়ে রাখার জেদ চেপে বসেছে। ফলে সবাই ময়দানে নেমে জনসংযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। গৌতমবাবু বলেন, “কংগ্রেস বা তৃণমূল নয়, সিপিএম চিন্তা করছে আইএনপিটি-কে নিয়ে। উপজাতি ভিত্তিক দলটি নির্বাচনে জঙ্গিদের কাজে লাগাতে চাইবে বলেই আমাদের ধারণা। এরা আলফা ও মণিপুরের জঙ্গিদের সঙ্গেও সম্পর্ক গড়েছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে।” উল্লেখ্য, ৬০ আসনের বিধানসভায় এখন বামফ্রন্টের আসনসংখ্যা ৪৯। কংগ্রেস ১০ ও তাদের জোটসঙ্গী আইএনপিটি-র আছে ১ জন বিধায়ক।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.