আজও বৃষ্টির সম্ভাবনা
বর্ষণের কল্যাণেই ডেঙ্গির দাপটে ভাটা
য়েক দিনের বৃষ্টির পরে ডেঙ্গি রোগীর স্রোতে কিছুটা ভাটা লক্ষ করা যাচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে, শনি থেকে রবিবার, ২৪ ঘণ্টায় সারা রাজ্যে নতুন করে ১১ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। আর কলকাতায় নতুন ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা সাত। ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির এই হার গত দু’সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই কম। ওই দুই সপ্তাহে প্রতিদিনই মহানগরে ১০ থেকে ১২ জনের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসত।
ডেঙ্গির দাপট কমার অনেকটা কৃতিত্বই ধারাবর্ষণের। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা মানছেন, জমে থাকা জল গত সপ্তাহের দু’দিনের বৃষ্টিতে অনেকটাই প্রাকৃতিক ভাবে ধুয়ে গিয়েছে। তাতে বেশ কিছুটা ধ্বংস হয়েছে মশার আঁতুড়ঘর। কলকাতা পুরসভা কিংবা স্বাস্থ্য দফতরকে তেমন কিছুই করতে হয়নি। বৃহস্পতি ও শুক্রবার বৃষ্টি কমে কড়া রোদ ওঠায় খানিকটা নিরাশই হন পুরসভার মশক নিবারণ দফতরের কর্তারা। তবে শনিবার দুপুরের পরে ফের শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, নিম্নচাপ অক্ষরেখার জেরে আজ, সোমবারেও দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হবে। এই বৃষ্টিতে মশার আর এক দফা বংশলোপের আশায় আছেন পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতর।
ডেঙ্গি প্রতিরোধে পথে নেমেছেন পুরকর্মী। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র
কারণ, দু’পক্ষই মশক নিধন অভিযান শুরু করেছে দেরিতে। এবং দুই তরফই এখনও তাকিয়ে আছে প্রাকৃতিক দাওয়াইয়ের দিকে।
গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টির পরে প্রাকৃতিক ভাবে মশা যে কিছুটা হলেও কমেছে, তার প্রমাণ মিলছে চিকিৎসকদের চেম্বার এবং বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগে। এক চিকিৎসকের কথায়, “শুক্র ও শনিবার জ্বরে ভোগা রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমই ছিল।” তবে বৃষ্টিতে মশা ঠিক কতটা কমল, সেটা বুঝতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে বলে মনে করছেন পতঙ্গ-বিশেষজ্ঞেরা।
ডেঙ্গিতে মৃত্যু নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য এবং বাস্তব পরিস্থিতির ফারাক থেকেই গিয়েছে। ওই দফতরের দেওয়া তথ্য বলছে, ডেঙ্গিতে এ বার রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন পাঁচ জন। এবং পাঁচ জনই কলকাতার। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা বাড়েনি বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। কিন্তু বাঙুর হাসপাতাল সূত্রের খবর, সেখানে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বজবজের এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে শনিবার। মুর্শিদাবাদ, দুর্গাপুর এবং মেদিনীপুরেও ডেঙ্গি রোগীর মৃত্যু হয়েছে গত দু’সপ্তাহে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের তথ্যে তার উল্লেখ নেই। কেন নেই, তার সদুত্তর মিলছে না। তবে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলেও অনেক ক্ষেত্রে সেটাকে ডেঙ্গি-মৃত্যু বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের এই যুক্তি মানতে রাজি নন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাই। তাঁদের অনেকেই বলছেন, হৃৎপিণ্ড সচল থাকলে কখনও মৃত্যু হয় না। তাই সব মৃত্যুই শেষ পর্যন্ত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু। যে-সব মৃত ব্যক্তির রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে, তাঁদের ডেথ সার্টিফিকেটে তা উল্লেখ করা হচ্ছে। এটাই নিয়ম বলে চিকিৎসকদের দাবি।
ডেঙ্গি-মৃত্যু নিয়ে এই চাপান-উতোরের মধ্যেই কলকাতার বাসিন্দারা যে কিছুটা অন্তত সচেতন হয়েছেন, মহানগরের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে তার প্রমাণ মিলেছে। কোথাও স্থানীয় বাসিন্দারা পাড়ার বিভিন্ন নির্মাণস্থলে নজরদারি চালিয়ে জমা জল নিজেরাই সরিয়ে দিয়েছেন। কোথাও আবার পুরসভার কাছ থেকে মশা তাড়ানোর কামান নিয়ে এসে ধোঁয়া দেওয়ার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পল্লিবাসী। ডেঙ্গির মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভাকে ১৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে রবিবার ঘোষণা করেছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অন্যান্য পুরসভাও বঞ্চিত হবে না। পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নবজাতকদের রাখার আধুনিক ব্যবস্থার উদ্বোধন করে চন্দ্রিমাদেবী এ দিন জানান, ডেঙ্গি রুখতে রাজ্যের অন্য সব পুরসভাকেই তিন লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.