মশা দমনে ভিন্নমত পুরকর্তৃপক্ষ ও বাসিন্দাদের
ক পক্ষের দাবি, তাঁরা যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে মোকাবিলার পথে নেমেছেন। আর এক পক্ষের বক্তব্য, যা দাবি করা হচ্ছে তার সঙ্গে কাজের অনেক ফারাক রয়েছে।
বস্তুত, ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব আটকাতে মশা দমনে বসিরহাট মহকুমার তিন পুরসভা টাকি, বাদুড়িয়া ও বসিরহাটের কাজকর্ম ঘিরে ওই সব পুরকর্তৃপক্ষ এবং বাসিন্দাদের মধ্যে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে।
তিন পুরসভার প্রধানদের দাবি, মশাবাহিত রোগের বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে পুরবাসীকে সচেতন করতে মাইক প্রচার শুরু হয়েছে। স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, বাজার-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্লিচিং পাউডার ও মশা মারার জন্য কামানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সন্দেহজনক রোগীদের রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও তিন পুর এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পুরসভার কথা ও কাজে বিস্তর ফারাক রয়েছে। নাম কা ওয়াস্তে কয়েকটি জায়গায় নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হলেও সর্বতো ভাবে তা করা হচ্ছে না। তার প্রমাণ, সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল জমে যাচ্ছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে ভাবে কিছু জায়গা ছাড়া সর্বত্র ছড়ানো হচ্ছে না মশা মারার তেল। চালানো হচ্ছে মশা মারার কামান।
মশা দমনে টাকি পুরসভার অভিযান। —নিজস্ব চিত্র।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের পক্ষ থেকে পুরসভাগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। বসিরহাটেক পুরপ্রধান কৃষ্ণা মজুমদার বলেন, “বর্ষার সময় স্বাভাবিক নিয়মে অনেক ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের মধ্যে জ্বর দেখা দিলেও এখনও পর্যন্ত কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পুরসভার কাছে খবর নেই।” তিনি আরও জানান, পুরসভার পক্ষ থেকে ডেঙ্গি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করতে ইতিমধ্যে জোরাদার মাইক-প্রচার শুরু হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে জ্বরের খবর নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা-সহ বেশ কিছু মহিলাকেও নিয়োগ করা হয়েছে। জমা আবর্জনা সাফাইয়ের পাশাপাশি ২২টি ওয়ার্ডে মশা দমনে ব্লিচিং পাউডার, মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে।
সম্প্রতি বাদুড়িয়ায় প্রচুর মুরগি মারা যাওয়ায় মৃত্যুর কারণ জানতে মৃত মুরগির রক্ত ভোপালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তার রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছয়নি। তার উপর ডেঙ্গির মোকাবিলা তাঁরা কতটা তৎপর সে প্রশ্নের উত্তরে বাদুড়িয়ার উপ-পুরপ্রধান দিবস রায় বলেন, “মুরগির মৃত্যু নিয়ে আমরা যথেষ্টই চিন্তিত। তবে ডেঙ্গি মোকাবিলায় আমরা তৈরি।” ডেঙ্গি মোকাবিলায় সরকারের কাছ থেকে ৯৮ হাজার টাকা পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে মশা মারার স্প্রে শুরু করা হয়েছে। ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। নিকাশি নালাগুলি পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পুরসভার মেডিক্যাল টিম বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরের বিষয়ে মানুষকে সাবধান করা শুরু করেছে।
টাকি পুরসভার চেয়্যারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ডেঙ্গির মোকাবিলায় সরকারের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে। ওই টাকার সিংহভাগই মশা মারার তেল কিনতে খরচ করা হয়েছে। বাকি টাকায় ব্লিচিং পাউডার কিনে তা এলাকায় ছড়ানো হচ্ছে। হাসনাবাদের স্টেশন কলোনিতে আত্নীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসা বরাহনগরের এক বাসিন্দার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। তাঁকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে মশা দমনে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হলেও, বাসিন্দাদের মত ভিন্ন। কমল পালিত, সুকুমার বসু, ললিতা মণ্ডলদের অভিযোগ, মাইকে প্রচার করা হলেও নিকাশি নালা পরিষ্কারের বিষয়ে পুরসভা উদাসীন। তা না হলে পুর এলাকার মধ্যে দিয়ে ইছামতী নদী বয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সামান্য বৃষ্টি হলে জল দাঁড়ায় না।
মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত পাণ্ডে বলেন, “এখন পর্যন্ত একজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এলাকায় গিয়ে ডেঙ্গি নিয়ে মানুষকে নিয়মিত সতর্ক করা হচ্ছে।”
বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ও সিপিএম নেতা নারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মশা দমনে এই পুরসভা কোনও কাজই করছে না। এ ভাবে চলতে থাকলে বাসিন্দাদের স্বার্থে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।”
তৃণমূল নেতা ও কাউন্সিলার পাথর্সারথি বসু বলেন, “শুনেছি বর্তমান পুরবোর্ড মশা দমনে ব্লিচিং পাউডার ছড়াচ্ছে, কামান দাগছে। কিন্তু বাস্তবে তো সে সবের কিছুই চোখে পড়ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.