‘যুবরাজকে দেখে মনে হয় জীবনের যে কোনও যুদ্ধ জেতা যায়’
যুবরাজ সিংহকে নিয়ে যখন দেশ জুড়ে আবেগের ঢেউ আছড়ে পড়ছে, তাঁর ডায়েট চার্ট থেকে শুরু করে ট্রেনিং সেশনের খুঁটিনাটি যখন জাতীয় আলোচনার বিষয়বস্তু, তখন যুবরাজের দৈনন্দিন নির্ঘণ্ট থেকে ফিরে আসার একক যুদ্ধ, সবই তাঁর চোখের সামনে ঘটে চলেছে। ধোনি-কোহলিদের মতো বাংলার মনোজ তিওয়ারিও সাক্ষী থাকছেন ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতির।
কী রকম?
বিশাখাপত্তনমের ড্রেসিংরুম। একটু আগেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে, ম্যাচ পরিত্যক্ত। চোখেমুখে অদ্ভূত বিষণ্ণতা নিয়ে ড্রেসিংরুমের লাগোয়া বারান্দায় দাঁড়িয়ে যুবরাজ। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়েও যে যুবরাজ টুইট করে যেতেন একের পর এক, শনিবার থেকে অদ্ভূত ভাবে তিনি নিশ্চুপ। মন খারাপ? “কষ্ট তো হবেই। যুবি কাল ভীষণ ভাবে খেলতে চেয়েছিল,” রবিবার রাতে চেন্নাইয়ের টিম হোটেল থেকে আনন্দবাজারকে ফোনে বলছিলেন মনোজ। “এত দিন অপেক্ষা করে থাকতে হয়েছে যুবরাজকে। মাঠে নামার জন্য ও মরিয়া ছিল বললেও বোধহয় কম বলা হয়। আমরা যারা ওর রোজকার লড়াইটা এত কাছ থেকে দেখছি, মনে মনে চাইছিলাম কাল ও মাঠে নামুক। খেলুক। তা হলে যোগ্য বিচার পেত ওর এত মাসের লড়াই।”
যে লড়াই থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন মনোজ নিজেও। যুবরাজের থেকে কী কী শিখলেন? “শিখেছি ঠিক বলব না। তবে যুবরাজ আমাকে ভীষণ ভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। এনসিএ-র শিবিরে ওর সঙ্গে ট্রেনিং করার সময় ওর চোখে অদ্ভূত একটা প্যাশন দেখতাম। পাশেই চিন্নাস্বামীতে এত দিনের সতীর্থরা টেস্ট ম্যাচ খেলছে, এটা বোধহয় ওকে আরও তাতিয়ে দিয়েছিল। মাঠে ফেরার যে প্রচণ্ড খিদেটা সেই সময় যুবরাজের চোখে দেখেছিলাম, কোনও দিন ভুলতে পারব না,” এক নিশ্বাসে বলে মনোজ একটু চুপ। তার পর সংযোজন, “এত দিন দাদিকে দেখে অবাক লাগত। দল থেকে বাদ পড়ে ইডেনে কী ভাবে একা একা লড়ে যেত। দিনের পর দিন ট্রেনিং করত। এখন থেকে যুবরাজের নামটাও দাদির পাশে রাখব। যুবরাজকে দেখলে এখন মনে হয়, জীবনের যে কোনও যুদ্ধেই জেতা যায়।”
পঞ্জাবপুত্তরের যুদ্ধটা যে সহজ ছিল না, এত দিনে কারওরই অজানা নেই। কিন্তু এখনও সেই প্রসঙ্গে ঢুকলে গায়ে কাঁটা দেয় বাংলা অধিনায়কের। “কেমোথেরাপি শব্দটা শুনলে বোঝা যায় না ব্যাপারটা আসলে কতখানি ভয়াবহ। যুবরাজকে কাছ থেকে দেখেছি বলে জানি, ওর উপর দিয়ে ঠিক কী ঝড় বয়ে গিয়েছে। কিন্তু অবাক লাগে ওর মনের জোর দেখে। এখনকার ফিল্ডিংয়ে ড্রিল সেশন বলে একটা ব্যাপার আছে। শরীরের সবটা যেন নিংড়ে নেয়। যুবরাজ সেটা দিনের পর দিন করে যাচ্ছে। তার উপর প্রত্যেক সন্ধেয় জিম সেশন...কিচ্ছু বাদ দিচ্ছে না। এই তো একটু আগেই জিম করে একসঙ্গে ফিরলাম আমরা...।”
যুবরাজের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আজকের নয়। বছর পাঁচেক আগে চ্যালেঞ্জার ট্রফি খেলার সময় থেকেই যুবি আলাদা চোখে দেখেন মনোজকে। “এই তো এনসিএ-তে যে দিন প্রথম দেখা হল, আমার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলেছিল, তুই তো শ্রীলঙ্কায় ফাটিয়ে দিয়েছিস,” বলছিলেন মনোজ। সঙ্গে যোগ করেন, “মাঝে মাঝে মনে হয় যুবরাজ যেন আমার বড় দাদা। ওর কথাবার্তায় সব সময়ই একটা স্নেহের ছোঁয়া পেয়েছি। আর দাদা বলে ভাবি বলেই আশা করব, চেন্নাইতে যেন ওর কামব্যাকটা হয়। বৃষ্টি যেন এখানেও না ডোবায়।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.