আশা জাগিয়েছে ইউরোপ • নজর এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দিকে
সুড়ঙ্গ শেষে আলোর খোঁজে বাজার
ভারতের বাজার কতটা বিশ্ব বাজার এবং সেই বিশ্ব বাজার কতটা ইউরোপীয় অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল, তার প্রমাণ মিলেছে গত শুক্র ও শনিবার। মূল্যবৃদ্ধি, চড়া সুদ, বৃষ্টিতে ঘাটতি এবং ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতির চাপে নিস্তেজ ভারতের বাজারকেও ওই দু’দিন চাঙ্গা করে দিয়েছে ইউরোপ নিয়ে আশার আলো।
শুক্রবার এক লাফে সেনসেক্স উঠেছে ৩৩৭ পয়েন্ট। শনিবারের বিশেষ লেনদেনে আরও ৬৬। বাজারের এই হঠাৎ উত্থানের কারণ, ইউরোপীয় অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরার সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনাই ‘বুস্টার’-এর কাজ করেছে সারা বিশ্বে। ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, কার্যত কোনও সীমা না-রেখেই স্পেন, গ্রিসের মতো আর্থিক সঙ্কটে আক্রান্ত দেশের বন্ড কিনবে তারা। আর এই সিদ্ধান্তই চাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ব বাজারকে। একই পথে হেঁটেছে এ দেশের বাজারও।
তবে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা না-হলে এই উত্থান শুধু বিদেশি প্রভাবে ধরে রাখা শক্ত। বরং অনেকেরই মতে, এই উত্থান শেয়ার বিক্রির ভাল সুযোগ। তাঁদের দাবি, এই ঊর্ধ্বগতি যদি আরও দু’চার দিন চলে এবং সেনসেক্স ১৮ হাজার পেরোয়, তবে তা সুযোগ করে দেবে বহু দিন ধরে পড়ে-থাকা ‘তেমন ভাল নয়’ এমন শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে আসার। একই কথা প্রযোজ্য অনেক মিউচুয়াল ইউনিটের ক্ষেত্রেও। পরের পতনে আবার সুযোগ পাওয়া যাবে নতুন করে লগ্নি করার।
অনেকেরই অবশ্য ধারণা, তিল তিল করে আশা জাগাচ্ছে ভারতের অর্থনীতিও। শেষ বেলায় ভাল বৃষ্টিপাত বর্ষার ঘাটতি নামিয়ে এনেছে ১০ শতাংশের আশেপাশে। বৃদ্ধির হার এক চুল হলেও বেড়েছে। সুদ কমার আশায় দিন গুনছে ভারতীয় শিল্প-বাণিজ্য মহল। ১৭ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি পর্যালোচনার দিন। শিল্প-বাণিজ্যে বিশ্বকর্মা কতটা প্রাণ ফেরান, তা-ই এখন দেখার। সুদ ও নগদ জমার অনুপাতের (সিআরআর) মধ্যে অন্তত একটিও যদি সামান্য কমে, তবে অবশ্যই তার সদর্থক প্রভাব পড়বে বাজারে। তাই আর একটা সপ্তাহ দেখে শেয়ার কেনা-বেচার সিদ্ধান্ত নিন।
শীষর্র্ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বসে না-থেকে অর্থমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এরই মধ্যে বাড়ি ও গাড়ি ঋণে সুদ কমিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বেশ কিছু ব্যাঙ্ক। স্টেট ব্যাঙ্ক সুদ কমিয়েছে জমার উপরেও। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ১৭ তারিখে সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত নিলে, তা বাড়িয়ে দিতে পারে নথিবদ্ধ বন্ডের দাম। অর্থাৎ, এই সপ্তাহ বন্ড অথবা বন্ড ফান্ডে লগ্নির জন্য ভাল হতে পারে। সুদ কমলে চাঙ্গা হবে ব্যাঙ্ক শেয়ারগুলিও। সিআরআর কমলেও লাভবান হবে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি। কারণ, এই জমায় কোনও সুদ দেয় না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তাই সিআরআর কমলে বাজারে টাকার জোগান বাড়বে। তাতে শক্তি পাবে বাজার। সুতরাং এ বার বিশ্বকর্মা পুজোর দিনটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিল্প এবং শেয়ার বাজারের কাছে।
নিজের রেকর্ড নিয়মিত ভেঙে চলেছে সোনা। দাম এখন সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিশেষজ্ঞদের আশা, দীর্ঘ মেয়াদে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রাণ ফিরলে সোনাকে বেঁধে রাখা সম্ভব হবে একটি গণ্ডির মধ্যে। যাঁরা সময়ে লগ্নি করেছেন, তাঁদের অবশ্য এখন সোনায় সোহাগা। ব্যাঙ্ক জমায় সুদ কমার সম্ভাবনা এখন প্রবল। যাঁরা ঝুঁকি নিতে পিছপা নন, তাঁরা হয়তো লগ্নি সরিয়ে নেবেন বাজার ও ফান্ডে। অন্যরা সুদ কমার আগেই লগ্নি করতে পারেন দীর্ঘমেয়াদি ব্যাঙ্ক আমানতে। বড় মেয়াদে খুলতে পারেন রেকারিং ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট। এখন অ্যাকাউন্ট খুললে চুক্তি অনুযায়ী সুদ পেতে থাকবেন সুদ কমে যাওয়ার পরেও। লগ্নি করতে পারেন ৫ বছর মেয়াদি কর সাশ্রয়কারী ব্যাঙ্ক আমানতেও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.