হাসপাতালের শৌচাগার সাফাই নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে একযোগে পথে নামছে জলপাইগুড়ি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থাগুলির তরফে জানানো হয়েছে, তারা যৌথ ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার রোগীর পরিবারের কয়েকজন ওয়ার্ডের বাইরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন, “সুপারের শৌচাগার তিন বার সাফাই হবে। ওয়ার্ডে একবারও হবে না। এমন চলতে পারে না।” জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার বলেন, “আমি নিজে বিষয়টি খোঁজ নেব। এমনটা কখনও থাকা উচিত নয়। সাধারণ রোগীদের সব ধরনের পরিষেবা দেওয়াটাই আমাদের প্রধান কাজ।” এদিন জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী বলেন, আমরা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে একসঙ্গে নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদ জানাতে যাব। দেশ থেকে ইংরেজরা বহুদিন আগে চলে গেলেও এখনো কিছু ‘সাহেব’ রয়ে গিয়েছেন.। যাঁরা শুধুমাত্র নিজেদের স্বাচ্ছ্যন্দের কথাই ভাবেন। আর সাধারণ গরিব মানুষদের শুধুই উদ্বৃত্ত বলে মনে করেন। সভ্য সমাজে এমনটা আর কতদিন চলবে?” হাসপাতাল সহ জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবার নজরদারি চালানো জেলা স্বাস্থ্য সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি দীপ্তি দত্ত বলেন, “এখন আমাদের আর কিছুই জানানো হয় না। আগে হাসপাতালের কর্তারা বারবার জেলা পরিষদের কাছে আসত। জেলা পরিষদ থেকে সদর হাসপাতালকে রোগী পরিষেবা দেওয়ার জন্য নানা খাতে টাকা দিয়েছে। তার মধ্যে পানীয় জল শৌচাগারও রয়েছে। যদিও সে সব বিষয়ে নির্দেশ দিলে তা শোনার কেউ নেই।” এ দিকে বৃহস্পতিবার সকালে সদর হাসপাতালের বর্হিবিভাগে শৌচাগারের বেহাল দশা নিয়ে হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে কথাকাটাটি হয় রোগীর পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের। শৌচাগার সাফ করে দিতে বললেও কর্মীরা রাজি হননি বলে তাদের অভিযোগ। এদিন হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর আত্মীয় হলদিবাড়ির সঞ্জয় বর্মন বলেন, “হঠাৎই দেখলাম আজ সকাল থেকে শৌচাগার সাফ করার ধুম পড়ে গিয়েছে। কিন্তু একদিন সাফ করলে এই সমস্যা মিটবে না। হাসপাতালের শৌচাগার রোগীদের ব্যবহার করতে হয় তাতে কখনও আধিকারিকরা ঢোকেন না। ফলে যেমন অবস্থা হওয়ার কথা তেমনই থাকে।” জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধক্ষ্য কমল রায় বলেন, “নজরদারির অভাবেই এমন ঘটনা চলছে। সাধারণ রোগীরা শৌচাগারে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আঁতকে উঠছেন। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে নজর দিতে নির্দেশ পাঠাব।” হাসপাতালের সাফাইকর্মীদের সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে, তাদের সাফাই করার যে উপকরণ দেওয়া হয় এবং যেমন নির্দেশ দেওয়া হয়, সেই মতোই তাঁরা কাজ করেন। |