ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে মুর্শিদাবাদে।
বৃহস্পতিবার নুজেরা বিবি (১৯) নামে রানিনগরের বাসিন্দা এক মহিলার মৃত্যুও হয়েছে ডেঙ্গিতে। তাঁকে গত রবিবার রানিনগর ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পর দিন সেখান থেকে নুজেরাকে ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। নুজেরার খুড়-শ্বশুর আহাত মল্লিক বলেন, “বৌমা ডেঙ্গি-জ্বরে আক্রান্ত বলে সেখানের চিকিৎসকেরা জানান। তারপর মঙ্গলবার নুজেরাকে চিকিৎসকেরা ডোমকল থেকে বহরমপুরের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।”
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কী করছে প্রশাসন? |
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয় চক্রবর্তী বলেন, “ইতিমধ্যে বহরমপুর পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গি-মশা নিধনে নেমে পড়া হয়েছে। কোন এলাকায় ডেঙ্গি-মশা রয়েছে প্রথমে তা চিহ্নিত করা হয়। চিহ্নিত এলাকার ৩০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে থাকা ডেঙ্গি-মশার আশ্রয়স্থল ধ্বংস করা জরুরি। সেই কাজ চলছে। কারণ, ডেঙ্গি-মশা কোনও মতেই আশ্রয়স্থল থেকে ৩০০ মিটার ব্যাসার্ধের বাইরে যেতে পারে না। ফলে নিজের বাড়ি নিজে পরিচ্ছন্ন রাখলেই ডেঙ্গি-মশা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ উদ্যোগে ডেঙ্গি-মশার আশ্রয়স্থল গুলি ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।” মাটির ভাঁড়, প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত কাপ-গ্লাস, পরিত্যক্ত টায়ার অর্থাৎ যে সব পাত্রে জল জমে, সেগুলিকে ডেঙ্গি-মশার আশ্রয়স্থল বলে তিনি জানান।
ডেঙ্গি-মশা নিধনের জন্য মঙ্গলবার জেলার ২৬ জন বিএমওএইচ-কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে অজয়বাবু জানান। তিনি বলেন, “ডেঙ্গি-মশা নিধনের কাজে জনপ্রতিনিধিদেরও সামিল করা হবে। তার জন্য প্রথম পর্যায়ে বহরমপুর পুরসভার কাউন্সিলরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ কারণে পুরসভার কাছ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে।” এ দিকে আজ শুক্রবার দুপুর তিনটেয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরসভা ও পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক ব্যক্তি ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের ডেঙ্গি বিষয়ে সচেতন করা হবে। বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “তারপরও ডেঙ্গি-মশা নিধন সংক্রান্ত বিষয়ে কাউন্সিলরদের মধ্যে অস্পটতা থাকলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের প্রস্তাব মতো সচেতনতা শিবির করা হবে।”
পুরপ্রধানের আক্ষেপ, “বছর তিনেক আগেও স্বাস্থ্য দফতর থেকে পুরসভাকে মশার লার্ভা ধ্বংস করার তেল সরবরাহ করা হত। তিন বছর ধরে স্বাস্থ্য দফতর সেই তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বহু আবেদন করা সত্ত্বেও ওই তেল সরবরাহের বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কোনও রকম হেলদোল নেই।” |