ডেঙ্গি-যুদ্ধে অবশেষে কোমর বাঁধল পুরসভা
ডেঙ্গি মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভা প্রতি ওয়ার্ডে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১০ জন করে কর্মী নিয়োগ করছে। একই সঙ্গে কলকাতা আর্বান ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, কলকাতা বস্তি উন্নয়ন প্রকল্প এবং আইপিপি প্রকল্পের কর্মীরা এখন থেকে শহরের প্রতিটি বাড়ি ঘুরে ডেঙ্গি তথা জ্বরে আক্রান্তের তথ্য সংগ্রহ করবেন। প্রয়োজনে তাঁদের রক্ত পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন পুর-ক্লিনিকগুলিতে। ওই কর্মীরা ডেঙ্গি মোকাবিলায় সতর্কতা সম্পর্কেও মানুষকে অবহিত করবেন। বৃহস্পতিবার টাউন হলে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুরসভা যখন ডেঙ্গির প্রকোপ অস্বীকার করছে, তখন এমন সিদ্ধান্ত কেন? মেয়রের বক্তব্য, “স্বল্প পরিমাণে হলেও ডেঙ্গি হচ্ছে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতেই এই সিদ্ধান্ত।”
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শহরে ৩৫২ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের তথ্য পুরসভার হাতে এসেছে। তাঁর দাবি, অনেক ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার আশপাশের এলাকার ডেঙ্গি আক্রান্তদের সঙ্গে এই সংখ্যা গুলিয়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে, কলকাতা পুর-এলাকায় প্রচুর মানুষ আক্রান্ত বলে ‘অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে।
ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভা ‘উদাসীন’, এই অভিযোগে এ দিন মেয়রের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান বাম কাউন্সিলরেরা। পুরসভায় বামফ্রন্টের মুখ্য সচেতক অমল মিত্র জানান, ডেঙ্গি নিয়ে আলোচনা করতে যাতে তলবি পুর-অধিবেশন ডাকা হয়, সে জন্য তাঁরা চেয়ারম্যানকে নোটিস দিচ্ছেন। অমলবাবু জানান, এ দিন মেয়রের কাছে তাঁরা দাবি তুলেছেন ডেঙ্গি নিয়ে আলোচনার জন্য বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক। কিন্তু মেয়র তা খারিজ করে দেন। এমনকী, ডেঙ্গি প্রতিরোধে বাম দলগুলি যে সব প্রস্তাব দিয়েছে, মেয়র সেগুলিও নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা তলবি অধিবেশন ডাকার নোটিস দিচ্ছেন।
জাতীয় মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ প্রকল্পের প্রতিনিধিরা এ দিনও কলকাতার কিছু ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন। রাজ্য সরকার ও পুর-প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা। পুরসভার হয়ে যে সব সংগঠনের কর্মীরা পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচি রূপায়িত করেন, এখন তাঁদেরই ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচিতে নিয়োগ করা হচ্ছে। এ দিন তাঁরা টাউন হলে মেয়র ও মেয়র পারিষদকে (স্বাস্থ্য) ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের বক্তব্য, মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পান তাঁরা। তাঁদের কাজের সময় সকাল আটটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত। এখন তাঁদের বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কাজ করতে বলা হচ্ছে। তা করতে হলে তাঁদের বেতন বাড়াতে হবে।
চাপের মুখে মেয়র ঘোষণা করেছেন, আগামী দু’মাস ওই কর্মীদের মাসে অতিরিক্ত দু’হাজার টাকা করে উৎসাহ ভাতা দেওয়া হবে।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) এ দিন দাবি করেন, বাইপাস সংলগ্ন পূর্ব কলকাতার ওয়ার্ডগুলির মধ্যেই ডেঙ্গি সীমাবদ্ধ রয়েছে। তাঁর ধারণা, পরমা আইল্যান্ড থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের উপরে জমে থাকা জলেই ডেঙ্গির জীবাণুবাহিত মশার লার্ভা রয়েছে। কারণ, এ বার শহরে ডেঙ্গি শুরু হয়েছে ১০৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। তিনি জানান, ওই নির্মীয়মাণ উড়ালপুলে মশা মারার কর্মসূচি নেওয়া পুরসভার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
এ দিকে, ডেঙ্গিতে মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাতে এ দিন হাজরা মোড়, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, বড়বাজার ও মৌলালিতে পথ-অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় যুব কংগ্রেস। অবরোধ তুলতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে। সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে অবরোধের নেতৃত্ব দেন যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক দীপিকা পাণ্ডে। কাজের দিন ব্যস্ত সময়ে পথ অবরোধ কেন? দীপিকা বলেন, “ডেঙ্গি প্রতিরোধে সরকার বা পুরসভা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এই কর্মসূচি নিতে বাধ্য হয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.