পানাশালার কাজের ক্ষেত্রে কোনও গোলমালই নাবালিকা গায়িকা দীপা শর্মার মৃত্যুর কারণ বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের সন্দেহ। পুলিশ সূত্রের খবর, মারা যাওয়ার আগের দিন কাজে যাওয়ার আগে বিকালে দিদিকে টেলিফোন করে কাজ ছাড়ার কথা জানিয়েছিল নাবালিকা গায়িকা দীপা শর্মা। গ্যাংটক বা শিলিগুড়ির অন্যত্র সে কাজের খোঁজখবর করছে বলে জানায়। এমনকি, ওই রাতে দলের এক সদস্যের সঙ্গে দীপা’র গোলমাল হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। সেই ক্ষেত্রে কাজের ক্ষেত্রে গোলমালের জেরেই কী এই মৃত্যুর ঘটনা কী না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পরীক্ষার করা হচ্ছে দীপা মোবাইলের কলরেকর্ডও। মৃতার দিদি রাধা দেবী বলেন, “দীপা ওখানে কাজ করতে চাইছিল না। নতুন কাজ না পেয়ে কাজ ছাড়তে বারণ করি। গত সপ্তাহে দুই দিনের জন্য বাড়িতে এসেছিল। ওঁর মন ভাল ছিল না। মোবাইলে ঘনঘন ফোন আসছিল। পরে শনিবার একটি লাল রঙের গাড়িতে করে দুই যুবক বাড়িতে এসে ওকে নিয়ে যায়।” এদিনও মৃতার পরিবারের পাশাপাশি দীপার নাচগানের দল, হোটেল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশ। তবে এদিন অবধি পুলিশ অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি। ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শিলিগুড়ি ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অংমু গ্যামসো পাল বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে। সময়মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, মাস খানেক আগে শহরের আশ্রফনগরের যুবক লাকি আলি’র মাধ্যমেই দীপা ওই গানের দলে যোগ দেন। মৃতার জামাইবাবু আজিজ চৌধুরী এক সময় আশ্রফনগরে থাকতেন। সেই সুবাদেই লাকির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দুই জনের মধ্যে সম্পর্কও ছিল। এই লাকির বিরুদ্ধে দীপার পরিবারের লোকজন খুন, ধর্ষণ এবং টাকা নিয়ে চুপচাপ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনেছেন। এদিন লাকি জানিয়েছেন, আমার সঙ্গে পরিচয় ছিল ঠিকই। কাজের কথা বলেছিল তাই এক পরিচিতির মাধ্যমে গানের দলের ঢুকিয়ে দিই। ও নানা নেশা করত। তাই মেলামেশা কমিয়ে দিই। তবে আমি কাউকে হুমকি বা টাকা দিয়ে মামলা চেপে যাওয়ার কথা বলিনি। তাঁর দাবি, “আমি কিছু করলে তো পালিয়ে যেতাম। তা তো করিনি। যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি আছি।” পাশাপাশি, নাবালিকাকে দিয়ে পানশালায় গান করানোর অভিযোগ নিয়ে তদন্তে নেমে আবগারি দফতরও। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এদিন আবগারি দফতরের কর্তারা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। দীপা জন্মের প্রমাণপত্রও সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখানে ১৯৯৯ সালে দীপার জন্ম বলে জানা গিয়েছে। দ্রুত আবগারি দফতরের ওই রিপোর্ট জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের কাছে জমা পড়বে। তার পরেই প্রয়োজনে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। |