বৃষ্টির মধ্যে বেহাল রাস্তায় দ্রুত গতিতে একটি মোটরভ্যানকে ‘ওভারটেক’ করতে গিয়ে একটি যাত্রী বোঝাই বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে উল্টে যাওয়ায় জখম হলেন প্রায় ৩০ জন যাত্রী। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ রায়দিঘির শ্রীমতী বাসমোড়ের কাছে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনটি থানার পুলিশ, দমকল এবং স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারকাজে হাত লাগান। জখমদের রায়দিঘি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়দিঘি-ডায়মন্ড হারবার রোড ধরে এম-১০ রুটের বেসরকারি বাসটি রায়দিঘি থেকে ডায়মন্ড হারবার যাচ্ছিল। বাসে অন্তত ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। রাস্তাটি মাস দুয়েক ধরে বেহাল। পিচ উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি গিয়েছে। বৃষ্টিতে সেই সব গর্তে জলও জমে গিয়েছে। বাসটি দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময়ে সামনে একটি মোটরভ্যান পড়ে যায়। ‘ওভারটেক’ করতে গিয়ে বাসের সামনের ডান দিকের চাকা বড় গর্তে পড়ে। তার পরেই বাসটি রাস্তার ডান দিকের একটি খালে উল্টে যায়। বর্ষায় খাল ভরা ছিল। যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় চক্রতীর্থ এবং শ্রীমতী গ্রামের বাসিন্দারা এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগান। |
বাস উদ্ধারের কাজ চলছে। ছবি: দিলীপ নস্কর। |
আসে পুলিশ ও দমকলও। বাসের দরজা-জানলা ভেঙে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। পরে ক্রেন এনে বাসটিকে তোলা হয়। তবে, চালক-কন্ডাক্টরকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। দুর্ঘটনার পরে তারা পালায় বলে পুলিশ জানায়।
ওই বাসে রায়দিঘি থেকে মথুরাপুরে মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন বাড়িভাঙা গ্রামের বাসিন্দা আলেয়া বিবি। দুর্ঘটনায় তিনিও আহত হন। তিনি বলেন, “বাসটি জোরে চলছিল। মোটরভ্যানকে ওভারটেক করতে গিয়েই বাসটি উল্টে গেল।” স্থানীয় বাসিন্দা জাহির শেখ, মইদুল মোল্লারা জানান, খানাখন্দে ভরা এই রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দিনও একই কারণে দুর্ঘটনা ঘটল। দুর্ঘটনার জেরে বিকেল পর্যন্ত ওই রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ থাকে।
এম-১০ রুটের বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক রহিসউদ্দিন মোল্লা জানান, বেহাল রাস্তার কারণে নিয়মিত বাস খারাপ হচ্ছে। মাস দুয়েক আগেও এই রুটে ৩৮টি বাস চলত। এখন ১৪-১৫টি বাস চলে। সমস্ত বিষয়টি পূর্ত দফতরে জানানো হলেও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। তবে, বাস-চালকের দ্রুত গতিতে বাস চালানো নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
ডায়মন্ড হারবার মহকুমা পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার শরদিন্দু দাস বলেন, “রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ১১ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। ইতিমধ্যে দরপত্র ডাকার কাজও শেষ হয়েছে। কিন্তু বর্ষার জন্য এখনই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। বর্ষা শেষ হলে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”
অন্য দিকে, এ দিন সকালে মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর বাসমোড়ের কাছেও বেহাল রাস্তার কারণে একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। তবে, কেউ হতাহত হননি বলে পুলিশ জানিয়েছে। |