খবর পুলিশকে, নাবালিকা বোনের বিয়ে রুখলেন দাদা
কে বোন নাবালিকা। তার উপর, যার সঙ্গে বোনের বিয়ে হতে চলেছে, সেই সেনা জওয়ানের প্রথম পক্ষের স্ত্রী-র সঙ্গে এখনও বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে।
বোনের এই বিয়েতে তাই সায় ছিল না শিক্ষিত দাদার। কিন্তু, বাবা-মাকে বোঝায় কার সাধ্যি!
অগত্যা বোনকে বাঁচাতে পুলিশের শরণাপন্ন হলেন দাদা। গত ৪ সেপ্টেম্বর হিঙ্গলগঞ্জের মামুদপুরে এই ঘটনায় পুলিশের হস্তক্ষেপে বিয়ে আটকাল বটে। তবে পুরোপুরি নয়। ছেলেকে লুকিয়ে বৃহস্পতিবার হাসনাবাদে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে ফের পনেরো বছরের মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন বাবা-মা। কিন্তু, এ বারও ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়ালেন মেয়েটির দাদা।
তিনি হিঙ্গলগঞ্জ ও হাসনাবাদ থানার পুলিশকে ঘটনা জানিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি হব ‘বর’-এর প্রথম স্ত্রী রেহানা বিবিও সমস্ত ঘটনা জানিয়ে দেন। রেহানার অভিযোগে পেয়ে পুলিশ গিয়ে বিয়ে বন্ধ করার আগেই অবশ্য পালিয়ে যায় হবু ‘বর’। কনে ও তার বাবা-মাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য মেয়ের ১৮ বছর পূর্ণ না হলে তার বিয়ে দেবেন না বলে থানায় লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মেয়েটির অভিভাবকেরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, হিঙ্গলগঞ্জের মামুদপুরের বাসিন্দা আহমেদ শেখ। কৃষক পরিবার। ছেলে আজগর বিএ পাশ। দুই মেয়ের মধ্যে এক জন বিবাহিত। ছোট জন স্থানীয় স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। আজগরের দাবি, তিনি নাবালিকা বোনের বিয়ের তোড়জোড় দেখে বাবা-মাকে বারণ করেছিলেন। নাবালিকা বিয়ের নানা সমস্যার কথাও বুঝিয়েছিলেন। কিন্তু, পাত্র সাইফুদ্দিন মিস্ত্রি সেনাবাহিনীতে জওয়ানের চাকরি করায় কোনও আপত্তি শোনেননি বাবা-মা। শেষ পর্যন্ত বোনের বয়সের শংসাপত্র নিয়ে দাদা সটান হাজির হন থানায়। হিঙ্গলগঞ্জ থানার ওসি পার্থ সিকদার বলেন, “নাবালিকা মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার জন্য ওর বাবাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।”
পুলিশের দাবড়ানিতে প্রাথমিক ভাবে কিছুটা ভয় পেলেও এ বার ছেলেকে এড়িয়েই সাইফুদ্দিনের সঙ্গে ছোট মেয়ের বিয়ের তোড়জোড় করতে থাকেন আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী। খোঁজ নিয়ে আজগর জানতে পারেন, হাসনাবাদের ট্যাংরা গ্রামের বাসিন্দা সাইফুদ্দিনের আগে একবার বিয়ে হয়েছে। রেহানা বিবি নামে ওই মহিলা থাকেন স্বরূপনগর থানার কেওটশা গ্রামে। তাঁর সঙ্গে সাইফুদ্দিনের বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা এখনও চলছে।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার আহমেদ শেখ ও তাঁর স্ত্রী ছেলেকে না জানিয়ে মেয়েকে নিয়ে হাসনাবাদের বাইলানি গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি যান। উদ্দেশ্য, গোপনে মেয়ের বিয়ে দেওয়া। আজগর জানতে পেরে হিঙ্গলগঞ্জ ও হাসনাবাদ দুই থানাতেই সব জানান। রেহানা বিবির সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। হাসনাবাদ থানায় ছুটে যান রেহানা।
পুলিশের কাছে রেহানা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে সাইফুদ্দিন বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু, তাঁকে তাড়িয়ে দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছেন। রেহানা বলেন, “তার উপর যখন শুনলাম, ও ফের বছর পনেরোর এক কিশোরীকে বিয়ে করছে তখন থাকতে পারিনি। আপনারা এই বিয়ে বন্ধ করুন।”
স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেন রেহানা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রামে যায়। বন্ধ হয়ে যায় বিয়ে।
তার আগেই অবশ্য পগার পার সেনা-জওয়ান সাইফুদ্দিন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.