রাজীব খুনের সাক্ষ্যে কেঁদে ফেললেন রিঙ্কু
সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বারে বারেই কেঁদে ফেলছিলেন তরুণীটি। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই থামতে হচ্ছিল তাঁকে। এজলাসে তখন স্তব্ধ হয়ে বসে আইনজীবীরাও।
তরুণীর নাম রিঙ্কু দাস। দেড় বছর আগে বারাসতের অফিসপাড়ায় যাঁর সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছিল ছোট ভাই, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস। বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুদীপ নিয়োগীর এজলাসে রাজীব হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রধান সাক্ষী রিঙ্কু ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে এ দিন এজলাসেই কান্না ভেঙে পড়েন। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি বলেন, “আমার সঙ্গেই ঘটনাটা হয়েছে তো! তাই নিজেকে সামলাতে পারছি না।” বিচারক বলেন, “আমি তোমার অবস্থা বুঝতে পারছি। কিন্তু তোমাকে তো সব কিছু বলতে হবে।” বিচারকের সহানুভূতিতে নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে ঘটনার বিবরণ দিতে শুরু করেন রিঙ্কু।
আদালতে রিঙ্কু জানান, ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কাজ সেরে রাতে রাজীবের সাইকেলে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। বারাসত স্টেশন ছাড়িয়ে আদালতের কাছে তাঁদের সাইকেল আটকে দেয় তিন জন। তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। এক দুষ্কৃতী রিঙ্কুর গায়ে মদ ঢেলে দিতে গেলে রাজীব বাধা দেয়। খেপে গিয়ে তারা রাজীবকে মারতে থাকে। রিঙ্কু বলেন, “মারতে মারতেই ওরা ছোরা বার করে ঢুকিয়ে দিল ভাইয়ের পেটে।”
রিঙ্কু দাস রাজীব দাস
সেই সময় একটি ভ্যানরিকশায় কয়েক জন আসছিল। রিঙ্কু ভ্যানরিকশার আরোহীদের সাহায্য চাইলে তাঁদের ভয় দেখিয়ে হটিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা।
রিঙ্কু বিচারককে বলেন, তিনি ভ্যানরিকশার এক যাত্রীর পা জড়িয়ে ধরে সাহায্য চান। ভাইকে বাঁচাতে কাকুতি-মিনতি করেন। শেষ পর্যন্ত ভ্যানরিকশার সেই আরোহীর সাহায্যে জেলার এক কর্তার বাংলোর গেটে গিয়ে সাহায্য চান রিঙ্কু। সেখানে প্রহরারত পুলিশকর্মী বাংলোর বাইরে না-বেরিয়ে তাঁকে থানায় ফোন করতে বলেন। কিন্তু ওই প্রহরী তাঁকে থানার যে-ফোন নম্বর দিয়েছিলেন, সেটা ভুল ছিল বলে জানান রিঙ্কু। ইতিমধ্যে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। পাড়ার একটি ছেলে রক্তাক্ত রাজীবকে ভ্যানরিকশায় তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু বারাসত হাসপাতাল রাজীবকে ভর্তি নেয়নি। তারা গুরুতর আহত ওই কিশোরকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। পরের দিন আর জি কর হাসপাতালে মারা যায় রাজীব।
এ দিন বাবা এবং রাজীবের বন্ধুদের সঙ্গে আদালতে এসেছিলেন রিঙ্কু। আদালতে হাজির ছিল ওই ঘটনায় ধৃত তিন অভিযুক্ত মিঠুন দাস, বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায় ও মনোজিৎ বিশ্বাস। আদালতের বাইরে রিঙ্কু বলেন, “আমি চাই, এমন ঘটনা যেন আর কারও সঙ্গে না-ঘটে। আসামিদের ফাঁসি চাই আমরা।” বিশেষ কৌঁসুলি শান্তময় বসু বলেন, “অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মামলায় সাক্ষ্য নেওয়া হবে মোট ৪৩ জনের।” আজ, শুক্রবারেও রিঙ্কুর সাক্ষ্য নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.