শহরের পর্যটনস্থলগুলি দত্তক নিতে চলেছে স্কুলপড়ুয়ারা। দেশের নানা শহরে পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যায়নের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবেই কলকাতার স্কুলগুলিকে সজাগ করতে চায় রাজ্য। শহরের বিভিন্ন বণিকসভা, পুর-কর্তৃপক্ষ ও স্কুলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৃহস্পতিবার কমিটি গড়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা মতো পর্যটন দিবসে (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রকল্পের সূচনা হবে।
এ দিন টাউন হলে মন্ত্রী-আমলাদের সঙ্গে বৈঠকে স্কুলের প্রতিনিধিরা নিজেরাই পছন্দ মতো জায়গার দায়িত্ব নিতে চেয়েছেন। এর মধ্যে ভিক্টোরিয়া থেকে শুরু করে রয়েছে স্কুলের কাছের পার্ক, হ্রদ, দোকান সবই। গঙ্গাপাড়, ডালহৌসির মতো এলাকার সৌন্দর্যায়নের প্রকল্প শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘ক্লিন ইন্ডিয়া ক্যাম্পেন’ নামে কেন্দ্রীয় প্রকল্পটিও নিজের শহর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াবে বলেই মত পর্যটন দফতরের কর্তাদের।
শহরের পরিচ্ছন্নতায় গুরুত্ব দিচ্ছে প্রকল্পটি। স্কুলগুলিকে নিয়ে গড়া কমিটির সভাপতি, পর্যটন দফতরের সচিব বিক্রম সেন জানান, স্কুলগুলি কিছু দিন অন্তর দত্তক নেওয়া স্থান পরিষ্কার করবে। এতে পড়ুয়াদের শহরের পরিবেশ-ইতিহাস নিয়েও সচেতনতা বাড়বে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ইংল্যান্ডে একটি পুরনো ফাঁকা স্টেডিয়ামেও লোকে টিকিট কেটে ঢোকেন। কলকাতাকে সাজালেও এমন পর্যটনের সম্ভাবনা বাড়বে। এক বছর বাদে স্কুলগুলির পারফর্ম্যান্সের ভিত্তিতে সেরাদের ৬০ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
প্রকল্পটিতে স্কুলপড়ুয়াদের নানা ভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। শিশুদের আঁকা দ্রষ্টব্যস্থানগুলির বাছাই ছবি দিয়ে সচিত্র পোস্টকার্ড তৈরির মতো পরিকল্পনাও আছে। পর্যটনমন্ত্রী রচপাল সিংহ বলেন, “দেশের নানা জায়গায় নাগরিকসমাজকে যুক্ত করে পর্যটনের চেষ্টা সফল হয়েছে।” অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের দৃষ্টান্ত দিয়ে তিনি জানান, স্থানটি পুরোই স্বেচ্ছাসেবীদের যত্নে আছে। কলকাতাতেও এমন সংস্কৃতি গড়তে চায় প্রশাসন। কিন্তু তাঁর আফশোস, “এ শহরে কোনও জায়গা পরিচ্ছন্ন করা হলেও, কিছু দিন বাদে ফের তা আগের অবস্থায় ফিরে যায়। রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো হয় না।” |