মেট্রো-কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু টিকিট কাউন্টারে স্মার্ট কার্ড মিলছে না। দেড় মাস ধরে এই অবস্থা। স্মার্ট কার্ড না-থাকায় পাতাল রেলের কাউন্টারগুলিতে উপচে পড়ছে টোকেন কেনার ভিড়। অফিসের ব্যস্ততার সময়ে নাভিশ্বাস উঠছে যাত্রীদের। সামনে আবার পুজোর ভিড়। অবস্থার পরিবর্তন না-হলে তখন যাত্রীদের আরও নাজেহাল হতে হবে।
বিশেষত নিত্যযাত্রীরা স্মার্ট কার্ডের উপরে নির্ভর করেন বেশি। ওই কার্ড থাকলে কর্মস্থলে যাওয়া বা সেখান থেকে ফেরার সময় টিকিট কাটার লাইনে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ঝক্কি এড়ানো যায়। দেড় মাস ধরে প্রায় রোজই কাউন্টারে গিয়ে স্মার্ট কার্ডের খোঁজ করছেন যাত্রীরা। কাউন্টারের কর্মী জানিয়ে দিচ্ছেন, কার্ড নেই। মেট্রো-কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, দু’-এক সপ্তাহের মধ্যেই স্মার্ট কার্ড আবার পাওয়া যাবে কাউন্টারে। কিন্তু ছ’সপ্তাহেও কথা রাখতে পারেননি তাঁরা। গড়িয়া পর্যন্ত মেট্রো চলায় যাত্রী-সংখ্যা বেড়েছে। তার উপরে গড়িয়া ও বাঘা যতীনের মধ্যে একটি হল্ট স্টেশন বানিয়েছে পূর্ব রেল। সেটি যুক্ত হচ্ছে মেট্রোর কবি সুভাষ স্টেশনের সঙ্গে। কিছু দিনের মধ্যেই ওই হল্ট স্টেশনের উদ্বোধন হওয়ার কথা। তখন পাতাল-পথে যাত্রী-সংখ্যা আরও প্রায় ৫০ হাজার বাড়বে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। স্মার্ট কার্ডের চাহিদাও বাড়বে সেই অনুপাতে। অথচ কার্ড-সমস্যা মেটানোর তাগিদ দেখা যাচ্ছে না। এই অবস্থা কেন?
মেট্রো-কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার জানান, আর চার সপ্তাহের মধ্যে স্মার্ট কার্ড এসে যাবে। মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “প্রথমে সাত লক্ষ স্মার্ট কার্ড বানানো হয়েছিল। তা শেষ হয়ে গিয়েছে। আরও চার লক্ষের বরাত দেওয়া হয়েছে। সেগুলি আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।”
কাউন্টারের অভাবেও সমস্যা হচ্ছে। প্রতিটি স্টেশনেই হাতে গোনা টিকিট কাউন্টার। সব ক’টি সব সময় খোলা থাকে না। ফলে টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ ক্ষণ। কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। ক্ষোভ বাড়ছে যাত্রীদের। বিশেষ করে প্রান্তিক স্টেশন দমদম এবং গড়িয়ার হাল খুব খারাপ। দমদমে তো আবার বেলগাছিয়ার দিকে মাত্র তিনটি কাউন্টার। সেখানে ৩০-৪০ জন যাত্রী লাইনে দাঁড়ালেই প্ল্যাটফর্মে ঢোকা-বেরোনো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিত্যদিন ঝামেলা লেগেই থাকে। এই সমস্যারও সমাধান শীঘ্রই হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মেট্রোকর্তা প্রত্যুষবাবু। তিনি জানান, দমদম স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় পূর্ব রেলের টিকিট সংরক্ষণের জন্য একটি বড় ভবন তৈরি হচ্ছে। ওই নতুন ভবনে মেট্রোর জন্যও জায়গা থাকবে। দমদমে কাউন্টারের ভিড় তখন অনেকটাই সরে যাবে নতুন ভবনে। |