রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চায় ইনফোসিস। এবং বিশেষ আর্থিক অঞ্চল বা সেজ নিয়ে জট ছাড়াতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে একজোট হয়ে কেন্দ্রের কাছে বিকল্প আর্থিক সুযোগ-সুবিধার জন্য দরবার করতে রাজি তারা। বেঙ্গালুরুতে সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় এই দুই ইতিবাচক দিক উঠে এসেছে বলে দাবি শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এ রাজ্যে বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে এখনও অটল ইনফোসিস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই সুরে বলেছেন, রাজ্যের সঙ্গে কাজ করবে ইনফোসিস।
বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে ইনফোসিস-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বর্তমান এগ্জিকিউটিভ কো-চেয়ারম্যান ক্রিস গোপালকৃষ্ণন ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বিনোদ হামপাপুরের সঙ্গে বৈঠক করেন পার্থবাবু। টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ওঁরা বলেছেন সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করবেন। সেজ নিয়ে রাজ্যের অবস্থান সংস্থা বুঝেছে বলে জানিয়েছেন কর্তারা। তবে একই সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কথাও তাঁরা উল্লেখ করেছেন।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সে ক্ষেত্রে কলকাতা কেন্দ্র থেকে রফতানি কম রেখে দেশের মধ্যে ব্যবসার পরিমাণ বেশি রাখার দিকে সংস্থা ঝুঁকতে পারে। বিভিন্ন বিজনেস মডেল নিয়ে সংস্থার কর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালাচ্ছেন বলে জানান পার্থবাবু। তবে এই মধ্যপন্থা ঠিক কী ভাবে প্রয়োগ করা হতে পারে, তা নিয়ে মুখ খোলেনি সরকার বা সংস্থা, কোন পক্ষই।
পার্থবাবুর দাবি, সেজ তকমা নিয়ে সংস্থার মাথাব্যথা নেই। সেজ-এর আর্থিক সুবিধার দিকেই নজর ইনফোসিসের। রফতানি করে যে আয় হয়, তার উপর ১০০% করছাড়ের সুযোগ পাওয়া যায় সেজ-এ। এই সুবিধা দেওয়াটা রাজ্য সরকারের হাতে নেই। সেজ তকমার বাইরে হেঁটে এই আর্থিক সুবিধার বিকল্প কেন্দ্রের কাছ থেকে আদায় করে নিতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানাতে আগ্রহী ইনফোসিস। পার্থবাবু জানান, সংস্থার তরফ থেকে এমন প্রস্তাবও উঠে এসেছে।
ইনফোসিস মুখপাত্র জানান, কলকাতার প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রফাসূত্র খুঁজতে রাজ্যের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করবে সংস্থা। সেজ জটের অন্যতম সমাধানসূত্র শাপুরজি পালোনজির অনুমোদিত বিশেষ আর্থিক অঞ্চলে ইনফোসিসের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার প্রস্তাব। মন্ত্রীর সফরসঙ্গী তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের আধিকারিক স্বরূপ রায় জানান, বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি দিয়ে জমির লিজ দলিল চেয়েছে ইনফোসিস। এ দিন অবশ্য এ প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানান পার্থবাবু। মন্ত্রীর দাবি, সরকার ও সংস্থা, দু’পক্ষই পরস্পরের আন্তরিকতা ও আগ্রহ যাচাই করে নিতে চাইছিল। গত এপ্রিল মাসে সেজ বিতর্কের জেরে সংস্থা কর্তৃপক্ষ প্রকল্প স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। সেই অবস্থান থেকে ইনফোসিস অনেকটাই সরে এসেছে বলে দাবি জানান পার্থবাবু। |