আবার আসিব ফিরে, ফিরবে বলিউডও।
জীবনে প্রথম বার কাশ্মীরে এসেছিলেন। কাশ্মীর ছেড়ে যাওয়ার আগে ফিরে আসার অঙ্গীকারই করে গেলেন শাহরুখ খান। আশা রাখলেন, তাঁর নতুন ছবি দেখে পর্যটকরা নতুন করে উৎসাহিত হবেন কাশ্মীরে আসার জন্য। আসতে পারে বলিউডের অন্যান্য ইউনিটও।
শাহরুখের জাদু কি তবে কাশ্মীরকে আরও জনপ্রিয় করবে? ঠিক তেমনটা দাবি করলেন না অবশ্য। কিছুটা বিনয়ের সুরেই বললেন, “আমি খুব বড়সড় কেউ নই। তবে বড় ব্যানারের নামীদামি শিল্পীদের ছবি দেখে মানুষ নিশ্চয়ই এখানে আসবেন।” টানা ন’দিন ধরে কাশ্মীর উপত্যকায় শ্যুটিং করেছেন শাহরুখ। আর যাওয়ার শ্রীনগরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলে গেলেন, “আমাদের লন্ডন বা সুইৎজারল্যান্ডে শ্যুটিং করতে দেখে, সেই সব জায়গায় মানুষ ঘুরতে যান। আমার আশা, এই ছবিতে কাশ্মীরকে দেখে মানুষ আবার এখানে ভিড় করে বেড়াতে আসবেন।” সেই সঙ্গে তাঁর আশা, বলিউডও পছন্দের শ্যুটিং স্পটটাকে আবার খুঁজে পাবে ভূস্বর্গে। বলিউডের অন্য তারকারাও আসবেন কাশ্মীরে শ্যুটিং করতে। |
শ্রীনগরে শাহরুখ। ছবি: পিটিআই |
যশ চোপড়া নিজেই প্রায় তিন দশক পরে কাশ্মীরে এলেন। ‘কভি কভি’ আর ‘সিলসিলা’র পরে যশরাজের কোনও ছবিরই শ্যুটিং হয়নি উপত্যকায়। নতুন ছবিটির নাম এখনও ঠিক হয়নি। তবে যশরাজের পক্ষ থেকে ছবিটিকে ‘প্রেমের গল্পের শেষ কথা’ বলে প্রচার করা হচ্ছে। ছবিতে শাহরুখের সঙ্গে আছেন অনুষ্কা শর্মা আর ক্যাটরিনা কাইফ। গত কাল বিকেলে অনুষ্কার সঙ্গে হেলিকপ্টারে শ্রীনগর পৌঁছন তিনি। তাঁদের ঘিরে ভক্তদের উন্মাদনা ছিল তীব্র। তাদের অতি উৎসাহের ঠেলায় আজ সাংবাদিক বৈঠকও বারবার বিঘ্নিত হয়েছে।
শুরুতেই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। শাহরুখকে ঘিরে ভক্ত আর সাংবাদিকদের হুড়োহুড়ি। চিৎকার চেঁচামেচির ঠেলায় প্রথমে বেশ কিছু ক্ষণ শাহরুখতে এক কথা দু’বার করে বলতে হচ্ছিল। শেষমেশ শত্রুঘ্ন সিংহের কায়দায় শাহরুখকেও গলা তুলতে হল। ‘খামোশ’! তার পর নিজেই চেয়ার ছেড়ে উঠে ভিড় সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন শাহরুখ। কাউকে কাউকে তো বসার জায়গাও দেখিয়ে দিতে দেখা গেল তাঁকে। যদিও সে সব নিয়ে বলিউডের এই জনপ্রিয় তারকার নিজের খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না। সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিলেন। জানালেন, পরের বার চেষ্টা করবেন পরিবারকে নিয়ে আসার। “মনের অনেক সংশয় দূর করতে এই সফরটা আমাকে ভীষণ ভাবে সাহায্য করবে। এখানকার সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। আবেগে আমি পরিপূর্ণ।”
আসলে কাশ্মীরের সঙ্গে একটা পারিবারিক যোগাযোগও রয়েছে শাহরুখের। তাঁর ঠাকুমা ছিলেন এই উপত্যকার বাসিন্দা। সাংবাদিক বৈঠকে আজ শাহরুখ বলেন, “কাশ্মীরে আসাটা আমার কাছে একটা স্বপ্নের মতো। আমার ঠাকুমা এখানকার লোক ছিলেন। আর আমার বাবা সব সময় আমাকে এখানে আনতে চাইতেন। উনি যখন মারা যান, আমার বয়স মাত্র ১৫।”
বাবাকে ছাড়া এখানে এসে মনটা ভারী হয়ে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সব কিছু ছাপিয়ে ভূস্বর্গের নিসর্গেই মুগ্ধ শাহরুখ। ফেসবুক আর টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে গত কয়েক দিন ধরে বারবার সে কথা পোস্ট করেছেন তিনি। পহেলগাম থেকে গুলমার্গ। কখনও পাহাড়ের নিস্তব্ধতা, কখনও বা কাশ্মীরি খাবার। আবার কখনও বা উপত্যকার মানুষের ভালবাসা। সব কিছুই ছুঁয়ে গিয়েছে তাঁকে। ছুঁয়ে গিয়েছে কাশ্মীরের ভালবাসা। এ দিন বললেন, “এখানকার মানুষ খুব সদয়, ধৈর্যশীল আর অসম্ভব ভাল।”
প্রিয়জনের জন্মভিটে ছাড়ার আগে আবেগে ঘন শাহরুখের গলা। |