উৎসবের আবার শেষ আছে নাকি? ঈদ ফুরোতেই মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল ডোমকলের। কিন্তু রমজানের কারণে টানা প্রায় একমাস বন্ধ থাকার পর লিগের খেলা শুরু হতেই ফের ফুটবল উৎসবে মেতে উঠল সীমান্তবর্তী ওই মহকুমা সদর। বিকেল হতে না হতেই খেলা দেখতে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যাচ্ছে বিএলএসসি, এসডিএসএ’র মত মাঠগুলো। ডোমকল মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা পরিচালিত ২০১২-১৩ মরসুমের সিনিয়র প্রথম ডিভিসন ফুটবল লিগ শুরু হয়েছে ১৫ জুন থেকে। মোট ২৩টি দলকে দু’টো বিভাগে ভাগ করে খেলানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই বিভাগে নজর কেড়েছে বঘারপুর রমনা নওজোয়ান ক্লাব, বসন্তপুর ইয়াং ক্লাব, সাহাদিয়ার সবুজ সংঘ, অম্বরপুর প্রগতি পাঠাগার এবং এএমজেএফসি। এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি পয়েন্ট সংগ্রহ করে এগিয়ে আছে বঘারপুর রমনা নওজোয়ান ক্লাব। তবে এই ডিভিসনে ভাল খেলেও গোলের চুলচেরা পরিসংখ্যানে লিগ থেকে ছিটকে গিয়েছে সাগরপাড়া ফুটবল একাডেমি। বৃহস্পতিবার এসডিএসএ মাঠে ইসলামপুর মর্নিং ক্লাব ও বৃন্দাবনপুর ইয়ুথ ক্লাবের খেলা অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। দুই দলই কোনও গোল করতে না পারলেও টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ওই খেলা দর্শকরা উপভোগ করেছেন। মোট ৮টি দল নিয়ে ২৪ জুন থেকে শুরু হয়েছে সিনিয়র দ্বিতীয় ডিভিসনের খেলা। এই ডিভিসনে পয়েন্টের দৌড়ে এগিয়ে আছে ফতেপুর বিজ্ঞান ক্লাব, জুড়ানপুর ছাত্রবন্ধু ক্লাব ও ডোমকল জনকল্যাণ পাঠাগার। ডোমকল মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার পরিচালনায় আগামি মরসুম থেকে জুনিয়র লিগ শুরু হবে। ইতিমধ্যেই সেই লিগকে ঘিরে বিভিন্ন দলের মধ্যে শুরু হয়েছে জোর প্রস্তুতিও। সাগরপাড়া ফুটবল একাডেমি এবং ভগীরথপুর ফুটবল একাডেমি ইতিমধ্যেই এলাকার ক্ষুদে খেলোয়াড়দের বাছাই করে দলও তৈরি করে ফেলেছে। সাগরপাড়া ফুটবল একাডেমির সম্পাদক হাসিবুল সরকার বলেন, “জুনিয়র লিগ না হওয়ার ফলে নতুন প্রতিভা উঠে আসছে না। আগামি মরসুম থেকে জুনিয়র লিগ শুরু হওয়ার খবরে আমরা খুশি। ক্ষুদেদের নিয়ে অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছি।’’
গত কয়েক বছর ধরে ডোমকলে ফুটবলকে ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। তার উপর এই মরসুমে দ্বিতীয় ডিভিসন শুরু হওয়ায় একদিকে যেমন নতুন দলগুলো প্রথম ডিভিসনে যাওয়ার জন্য মরিয়া, অন্য দিকে প্রথম ডিভিসনে নিজেদের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে এক ইঞ্চিও মাটি ছাড়তে নারাজ প্রথম ডিভিসনের দলগুলো। ক্রীড়া সংস্থাসূত্রে জানা গিয়েছে ডোমকল লিগে এই প্রথম দুটো বিভাগ চালু হওয়ায় লিগের মেজাজটাই আগের থেকে অনেক বদলে গিয়েছে। কী রকম? ডোমকল মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ধীমান দাস জানাচ্ছেন, “এর আগের মরসুমের লিগগুলোতে একটাই ডিভিসন ছিল। পিছিয়ে পড়া দলগুলো শেষের দিকে এসে খেলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলত। অনেক দলই লিগের মাঝপথে এসে লিগ থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করতে চেয়ে লিখিতভাবে আমাদের কাছে আবেদনও জানাত। ফলে শেষের দিকে লিগের চেনা মেজাজটাই আর খুঁজে পাওয়া যেত না। এ বার কিন্তু সেই হাল ছেড়ে দেওয়া ব্যাপারটা আর নেই। লিগের খেলা শেষের দিকে হলেও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে যাচ্ছে। পিছিয়ে থাকা দলগুলোও লিগের খেলাগুলোতে এই টানটাই উত্তেজনাটা জিইয়ে রাখতে এই হার না মানা মনোভাবটাই তো জরুরি।” ফলে ঈদের শেষে ডোমকল থেকে গেল ডোমকলে নয়, বলা যেতে পারে ডোমকল মজে থাকল ফুটবলে। |