|
|
|
|
কর্মীদের বেতন জট কাটল, তবে অনাস্থা নিয়ে ধোঁয়াশা |
খড়্গপুরে পুরপ্রধান জহরলাল পাল-ই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
আপাতত সমস্যার সমাধান হল। তবে জট পুরোপুরি কাটল না।
তৃণমূলের জহরলাল পালকেই খড়্গপুরের পুরপ্রধানের কাজ চালানোর নির্দেশ দিল পুর-দফতর। দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, খড়্গপুর পুরসভার অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি এখন ‘লিগ্যাল সেলে’র বিবেচনাধীন। যতক্ষণ না সেল কোনও মতামত দিচ্ছে, ততক্ষন পর্যন্ত ২৭ অগস্টের আগে পুরসভা যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। অর্থাৎ, জহরলাল পালই পুরপ্রধানের কাজকর্ম চালাবেন। বুধবার বিকেলে এই নির্দেশের প্রতিলিপি এসে পৌঁছয়। পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার (ই ও) বাসুদেব পালও বলেন, “বুধবারই ওই নির্দেশ পেয়েছি। অনাস্থা সংক্রান্ত বিষয়টি এখন লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন।”
বুধবার পুরসভায় এসেছিলেন জহরলাল পাল। তিনি বলেন, “পুর-দফতরের নির্দেশ মতো কাজ শুরু করেছি।” এর ফলে কর্মীদের বেতন সংক্রান্ত জটিলতা দূর হবে। তবে অনাস্থা-জট পুরোপুরি কাটল না। পরিস্থিতি দেখে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে কংগ্রেস। বুধবার সন্ধ্যায় দলীয় কাউন্সিলরেরা এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর রবিশঙ্কর পান্ডে বলেন, “পুর-দফতর থেকে একটি নির্দেশ এসেছে বলে শুনেছি। তবে অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি যখন লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন, তখন দফতর থেকে উপপুরপ্রধানকে কাজকর্ম চালানোর নির্দেশ দেওয়াই উচিত ছিল। আমরা এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারি। দলে আলোচনা করেই যা করার করব।” |
|
সাতদিন পরে পুরভবনে পুরপ্রধান। —নিজস্ব চিত্র। |
গত ১৪ অগস্ট তৃণমূল পরিচালিত খড়্গপুর পুরসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২৭ অগস্ট বোর্ড মিটিং হয়। ওই মিটিং বৈধ না অবৈধ, তা নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে। মিটিংয়ে উপস্থিত ৩১ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৬ জনের সমর্থন নিয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন কংগ্রেসের চিত্তরঞ্জন মণ্ডল। এরপর অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। পরিস্থিতি দেখে কৌশলে ভোটাভুটি এড়িয়ে যায় তৃণমূল। দলীয় কাউন্সিলররা একযোগে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। তৃণমূলের বক্তব্য, অবৈধ ভাবে সভাপতি নির্বাচন হয়েছে। পুরপ্রধানের পরিবর্তে সভাপতি হন উপপুরপ্রধানই। কংগ্রেস দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের মতে, অনাস্থা ভোটে পুরপ্রধান জহরলাল পাল হেরে গিয়েছেন। নিয়মানুযায়ী, অনাস্থা পাশ হয়ে গেলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফের পুরপ্রধান নির্বাচনের মিটিং হবে। আর এই সময়ের মধ্যে পুরসভার কাজকর্ম দেখভাল করেন উপ-পুরপ্রধানই। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে সরকারি ভাবে তা স্পষ্ট না হওয়ায় ২৮ অগস্ট থেকেই পুরসভায় কিছুটা ‘অচলাবস্থা’ দেখা দেয়। ২৯ অগস্ট থেকে পুরসভায় আসছিলেন না পুরপ্রধান। তার আগে ২৮ তারিখ জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তর কাছে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের এক প্রতিনিধি দল অভিযোগ জানিয়েছিল, পুরপ্রধান পদে না থেকেও জহরলাল পাল সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। এই পরিস্থিতিতে চেকে কে সই করবেন, তা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়। তার জেরে সেপ্টেম্বরের বেতন পাননি কর্মীরা। নিয়মানুযায়ী, চেকে পুরপ্রধান সই করেন। সঙ্গে এক্সিকিউটিভ অফিসারের সই থাকে। সেই জট আপাতত কাটল। পুরপ্রধান বলেন, “পুর-দফতর থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, সে ভাবেই পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।” |
|
|
|
|
|