বাণিজ্যনগরে বৈঠক ২২শে
অর্থতালুকে লগ্নি আকর্ষণে এ বার মুম্বই পাড়ি রাজ্যের
নিউটাউনে প্রস্তাবিত পশ্চিমবঙ্গের প্রথম অর্থতালুক (ফিনান্সিয়াল হাব) প্রকল্পে বিনিয়োগের খাতায় এখনও শূন্য। তাই লগ্নি টানতে এ বার আরবসাগরের তীরে পাড়ি দিচ্ছেন রাজ্য সরকারের কর্তাব্যক্তিরা।
বাম আমলের যৌথ উদ্যোগ পাশে সরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার একাই অর্থতালুক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তার পরে প্রায় দেড় বছরে বিজ্ঞাপনের পিছনে কোটি টাকা খরচ করেও কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এখানে বিনিয়োগে রাজি করাতে পারেনি হিডকো। সরকার এখন তাই কৌশল বদলে নিজেরাই বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছতে চাইছে। এই লক্ষ্যে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর দেশের ‘বাণিজ্য-রাজধানী’ মুম্বইয়ে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, দেশের এই দ্বিতীয় অর্থতালুকে লগ্নি টানতে গত ২৩ অগস্ট দিল্লিতে একটি বৈঠক হয়েছিল। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় চল্লিশটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্তারা সেখানে হাজির ছিলেন, ছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিও। বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত বৈঠকটির মূল উদ্যোক্তা ছিল কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় উদ্যোগের কারণ ব্যাখ্যা করে হিডকো-র চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিস সেন জানান, কেন্দ্রীয় সরকার উপনগরীর ধারণাকে উৎসাহ দিচ্ছে। স্বভাবতই অর্থতালুক প্রকল্পে তারা আগ্রহী।
তবে ২২ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবিত মুম্বইয়ের আলোচনাসভায় (সরকারি পরিভাষায়, রোড শো) কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক নেই। এই পরিস্থিতিতে বাণিজ্যনগরীতে অবস্থানরত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের গাঁটছড়া বাঁধতে পারে, এমন উপযুক্ত ‘মাধ্যম’ খুঁজছে রাজ্য সরকার। দেবাশিসবাবু জানাচ্ছেন, ওই লক্ষ্যে আর্থিক দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত কোনও পরামর্শদাতা সংস্থার (ট্রানজিশন অ্যাডভাইসর) খোঁজ পেতে আগ্রহীদের থেকে আবেদনপত্র চাওয়া হয়েছে। তারাই দু’পক্ষে সেতুবন্ধনের কাজ করবে।
এ দিকে আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থা ম্যাকেঞ্জি সম্প্রতি এক সমীক্ষা-রিপোর্টে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ৪৪০টি শহর আর্থিক গুরুত্বের নিরিখে সামনের সারিতে উঠে আসবে। তালিকায় ভারতের যে তিনটি শহর ঠাঁই পেয়েছে, তার একটি হল কলকাতা (বাকি দু’টি দিল্লি ও মুম্বই)। আবার ওই রিপোর্টেই ভারতে মোট যে ১৩টি শহরে অর্থতালুক গঠনের ‘সম্ভাবনা’র উল্লেখ রয়েছে, তার মধ্যে পূর্ব ভারতের শহর বলতে একমাত্র কলকাতা।
ম্যকেঞ্জি-রিপোর্টকে সামনে রেখেই দিল্লির বৈঠকে ‘উপস্থাপনা’ দিয়েছিলেন হিডকো-কর্তারা। সঙ্গে ছিল রাজ্য সরকারের নিজস্ব বক্তব্য। দেবাশিসবাবুর কথায়, “আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্তারা আগ্রহভরে আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। তাঁরা খুশি। ওঁরা বলেছেন, ফিরে গিয়ে নিজেদের সংস্থার বোর্ড মিটিংয়ে অর্থতালুকে বিনিয়োগ সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” মুম্বইতেও একই পথে এগোতে চায় রাজ্য।
নিউটাউনের ‘বিবাদি বাগ’ সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্টে অর্থতালুকের জন্য আপাতত ২৫ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। উপরন্তু উপনগরীর ‘সিন্থেসিস’ বিল্ডিংয়ে লগ্নিকারীদের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে ৮০ হাজার বর্গফুট। এই সব জায়গায় প্রকল্প চেয়ে হিডকো গত দেড় বছরে তিন-তিন বার বিজ্ঞাপন দিলেও কোনও সংস্থার কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। দিল্লির বৈঠকের পরে হিডকো আবার বিজ্ঞাপন দিয়েছে, তাতে সাড়া দেওয়ার সময়সীমা ৩১ অক্টোবর। দেবাশিসবাবু জানান, এ পর্যন্ত দু’-একটা প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক ভাবে যোগাযোগ করেছে।
তবে অর্থতালুকে লগ্নি আকর্ষণের অভিযান মুম্বইয়েই থেমে থাকবে না। হিডকো-সূত্রের দাবি, পরামর্শদাতার হাত ধরে ভবিষ্যতে বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদের মতো শহরেও পৌঁছে যেতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধিরা। এমনকী, শূন্য খাতায় নাম তুলতে সম্ভাব্য লগ্নিকারীর বোর্ড রুমে গিয়েও নিউটাউনের কথা বলতে দেবাশিসবাবুরা পিছপা নন। আপাতত ঠিক হয়েছে, মুম্বইয়ে রাজ্যের হয়ে সওয়াল করবেন নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সঙ্গে থাকবেন দেবাশিসবাবু ছাড়াও অন্য অফিসারেরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.