| পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কী ময়নাগুড়ি পুরসভার মর্যাদা পাবে! প্রশাসনিক মহলে প্রশ্নের উত্তর নেই। এমনকী বাসিন্দাদের কৌতুহল মেটাতে তাঁরা জানাতে পারছেন না পুরসভা গঠনের জন্য পাঠানো প্রস্তাবের কী হল। পরিষেবা নিয়ে এমনই ধোঁয়াশার পরিবেশে ডুয়ার্সের ওই প্রাচীন জনপদের বিভিন্ন মহলে হতাশা ও ক্ষোভ বেড়েছে। তিতিবিরক্ত বাসিন্দারা অনেকেই জানতে চাইছেন, আর কতদিন তাঁদের পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় দিন কাটাতে হবে! সামনে আরও একটি পঞ্চায়েত নির্বাচন। এ বারও কী ওই ভোটের লাইনে দাঁড়াতে হবে! বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব তো বটেই। ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও স্পষ্ট কিছু জানাতে পারছেন না। ময়নাগুড়ির বিডিও কল্যাণ বড়ুয়া বলেন, “ময়নাগুড়িকে পুরসভায় উন্নিত করার জন্য একটি প্রস্তাব জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরে কোনও চিঠিপত্র আমাদের দফতরে আসেনি। তাই বলতে পারব না পাঠানো প্রস্তাব কী অবস্থায় আছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রস্তাবটি পাঠানো হয় ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে। সেখানে ময়নাগুড়ি ও খাগরাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে পুরসভা গঠনের কথা বলা হয়। ৭টি মৌজার বসতি এলাকা ও জনঘনত্ব দেখে ১ হাজার ৪৯২.৭৫ একর জমির উপরে পুরসভাটি গঠনের প্রস্তাব ছিল। প্রস্তাবিত পুর এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার এবং তাঁদের ৮০ শতাংশ অকৃষিজীবী। প্রস্তাবিত পুর এলাকায় ছিল ময়নাগুড়ি মৌজার ২৯১.৬২ একর, দক্ষিণ মৌয়ামারি মৌজার ৩৩৫.২২ একর, বেংকান্দি মৌজার ৪৯৯ একর, উত্তর মাধাবডাঙা মৌজার ৭৬.৭৪ একর, উত্তর মৌয়ামারি মৌজার ৪০.৭৭ একর, মধ্য খাগরাবাড়ি মৌজার ৪২.৪৭ একর এবং দক্ষিণ খাগরাবাড়ি মৌজার ২০৯.৯৩ একর জমি। কিন্তু হইচই করে সমীক্ষার কাজ করা এবং সবর্দলীয় সভা করে পুরসভা গঠনের প্রস্তাব তৈরির পরে কাজ এগোয়নি। যদিও প্রশাসনের কর্তাদের কাছে বেহাল পরিষেবা নিয়ে কিছু বলতে গেলে বাসিন্দাদের শুনতে হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিকাঠামোতে ময়নাগুড়িতে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। স্বভাবতই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে পরিস্থিতি জেনেও কেন পঞ্চায়েত পরিকাঠামো টিকিয়ে রাখা! কেন পুরসভায় উন্নিত হবে না ওই জনপদ! ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও রাজীব দত্ত চৌধুরী বলেন, “ওই প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানা নেই। পুরসভার জন্য যে সমস্ত তথ্য চাওয়া হয়েছিল তার সবই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাঠানো হয়েছে।” তবে প্রশাসনের কর্তারা যাই বলুন না কেন বামফ্রন্টের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্যে পালা বদলের পরে তাঁদের সময় পাঠানো পুরসভার প্রস্তাবকে তৃণমূল সরকার হিমঘরে পাঠিয়েছে। ময়নাগুড়ির বামফ্রন্ট আহ্বায়ক অরুণ ঘোষ বলেন, “আমরা সময় মতো প্রস্তাব তৈরি করে পাঠিয়েছি। বামফ্রন্ট সরকারের তরফে ওই প্রস্তাব গুরুত্ব দেওয়া হলেও পালা বদলের পরে সবই অন্ধকারে চলে গিয়েছে।” যদিও ব্লক তৃণমূল নেতা সুভাষ বসু ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “পুরসভার জন্য দলীয়ভাবে পুরমন্ত্রীর সঙ্গে কথা চলছে। এই মুহুর্তে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।” |
