প্রেসিডেন্সি জেলের নিরাপত্তার গাফিলতির সুযোগ নিয়ে দু’জন বাংলাদেশি বন্দি পালিয়ে গিয়েছে। খোদ আইজি (কারা) রণবীর কুমারের বক্তব্য, এ বার হয়তো কোনও মাওবাদী অথবা কোনও কুখ্যাত অপরাধীও একই ভাবে পালিয়ে যেতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাঁর দাওয়াই, জেলের মূল ফটকে পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হোক। আইজি-র এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য পুলিশের এক কর্তার মন্তব্য, “নিজেদের কাজের জন্যই লোকবলের অভাব। সেখানে ওদের আর কী করে সাহায্য করব!”
২৮ অগস্ট দিনের বেলায় প্রেসিডেন্সি জেলের নিরাপত্তাকে কার্যত বোকা বানিয়ে চম্পট দেয় মহম্মদ সবুজ ও মহম্মদ আলি মণ্ডল নামের দুই বাংলাদেশি বন্দি। এই ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে জেল প্রশাসন। ৩১ অগস্ট রাজ্যের সব জেল সুপারের কাছে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন রণবীর কুমার। তাতে তিনি বলেছেন, ‘বন্দিরা যে-ভাবে পালিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে নিরাপত্তায় বড়সড় গাফিলতির প্রমাণ। যেখান দিয়ে ওই বন্দিরা পালিয়েছে, সেখানে কোনও প্রহরাই ছিল না। এটা বলাই বাহুল্য যে, প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি কুখ্যাত অপরাধী, জঙ্গি বা বামপন্থী উগ্রপন্থীরাও এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারত।’ এই ঘটনা বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে বলে ওই নির্দেশিকায় মন্তব্য করেছেন আইজি। জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে ১১ দফা দাওয়াই বাতলেছেন তিনি।
আইজি সব জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধনাগারগুলির প্রধান ফটকে পুলিশি প্রহরা বসানোর ব্যবস্থা করা হোক। এই নির্দেশের ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “নির্দেশ দিলে তো পুলিশি প্রহরা বসাতেই হবে। সে-ক্ষেত্রে যেখান থেকে কর্মী পাঠানো হবে, সেখানে লোকবল কমবে।” পুলিশে যে লোকবলের অভাব রয়েছে, সে-কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে রণবীর কুমার বলেন, “আমাদেরও হয়তো সব জায়গায় পুলিশি প্রহরার প্রয়োজন হবে না। যেখানে যেখানে একান্ত প্রয়োজন, সেখানেই পুলিশ চাওয়া হবে।”
নির্দেশিকায় সুপারদের নিয়মিত জেলে নজরদারি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সংবেদনশীল এলাকা এবং ‘ওয়াচটাওয়ার’ বা নজরমিনারে সব সময় নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন রণবীর কুমার। জেলের কর্তারা মনে করছেন, প্রেসিডেন্সি জেলের ঘটনার পিছনে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটির সঙ্গে সঙ্গে গোয়েন্দা কাজকর্মেও রীতিমতো গাফিলতি রয়েছে। তাই জেলের মধ্যে গোয়েন্দা ব্যবস্থা বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন আইজি। |