রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে প্রয়োজনের বেশি গাছ কেটে সবুজ ধ্বংস করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে। অবিলম্বে গাছ কাটা বন্ধ করতে ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার মগরাহাট-২ ব্লকের গোকর্ণি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোকর্ণি গ্রাম থেকে মাকালিয়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তার হাল খারাপ। দীর্ঘদিন ধরে ইট পাতা থাকলেও বর্তমানে তা বহু জায়গায় উঠে যাওয়ায় গিয়ে গর্ত তৈরি হয়ে বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার দু’পাশেই রয়েছে লম্বা লম্বা মেহগনি, সেগুন, কৃষ্ণচূড়া, ইউক্যালিপটাস-সহ অন্যান্য গাছ। রাস্তা সংস্কার করে পিচের করার জন্য মাস ছয়েক আগে প্রকল্পের অনুমোদন পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (আরআইডিএফ) থেকে ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়। বলা হয়েছিল পিচ রাস্তা হবে প্রায় সাড়ে ১২ ফুট চওড়া। তারপর দু’পাশে ৬ ফুট করে জায়গা থাকবে। অর্থাৎ প্রায় ২০ ফুট চওড়া রাস্তার কথা বলা হয়েছিল। কিন্ত দেখা যায় ওই মাপে রাস্তা করতে গেলে রাস্তার দু’পাশে থাকা গাছ কেটে ফেলতে হবে। এই অবস্থায় গোকর্ণি পঞ্চায়েতের তরফে সিদ্ধান্ত হয় গাছ কেটে ফেলার। এবং ওই গাছ বিক্রির টাকায় এলাকার মানুষের সুবিধার্থে একটি অ্যাম্বুল্যান্স কেনার সিদ্ধান্ত হয়। সেইসঙ্গে ঠিক হয়, রাস্তা সংস্কারের জন্য যে সংখ্যায় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, তার দ্বিগুণ পরিমাণ গাছ রাস্তার দু’ধারে লাগানো হবে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা ও মগরাহাট-২ ব্লকের কংগ্রেস সদস্য স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, রাস্তা তৈরির জন্য কিছু গাছ কাটার প্রয়োজন থাকলেও তার সুযোগ নিয়ে নির্বিচারে রাস্তার ধারে সমস্ত গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে এলাকার সুবজ নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। |
গোকর্ণী পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মুনমুন মণ্ডল বলেন, “ওঁদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পঞ্চায়েতে সাধারণ সভায় পাশ করিয়ে এবং প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সমস্ত কাজ করা হচ্ছে। এমনকী এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ওঁদের (কংগ্রেস) যে চারজন সদস্য রয়েছেন তাঁদের উপস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত হয়।” জেলা পরিষদের পূর্ত দফতরের স্থায়ী সদস্য গোবিন্দ মণ্ডলের দাবি, “গাছকাটা নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকতে পারে না। কারণ, এ ব্যাপারে প্রশাসনের সমস্ত স্তরে অনুমতি নেওয়ার পরেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।”
মগরাহাট-২ এর বিডিও রিজওয়ানুর ওয়াহাব বলেন, “ওই রাস্তা তৈরির জন্য রাস্তার পাশে ২৬০টি গাছ কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। গাছগুলিকে চিহ্নিতও করে দেওয়া হয়েছে। গাছ বিক্রি বাবদ ৫ লক্ষ টাকা পঞ্চায়েত তহবিল জমা পড়েছে। তবে চিহ্নিত গাছ ছাড়া অন্য গাছ কাটা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে।”
ডায়মন্ড হারবারের বন দফতরের রেঞ্জার অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই রাস্তার গাছ কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছিল। শীঘ্রই এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওষা হবে। |