ছাত্র বিক্ষোভে বন্ধ রাজ কলেজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
হস্টেলের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে আবাসিক পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার খোলাই গেল না ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ। পঠনপাঠন-সহ কলেজের কোনও কাজকর্মই হয়নি। সকাল দশটা নাগাদ কলেজের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। আবাসিক পড়ুয়াদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে এসএফআই। তৃণমূল ছাত্র পরিষদও (টিএমসিপি) আন্দোলনকারীদের দাবিগুলির ব্যাপারে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে। তবে কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে টিএমসিপি।
মাসখানেক ধরে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা হস্টেলে নিয়মিত পরিস্রুত পানীয় জল, পর্যাপ্ত আলো ও হস্টেল-ভবন সংস্কার-সহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছেন। এর আগে এই দাবিতে গত ১০ ও ২১ অগস্ট আবাসিক পড়ুয়ারা কলেজে তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। সোমবারও অধ্যক্ষ কিশোরকুমার রাঢ়ীকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হয়। মঙ্গলবার থেকে কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন আবাসিক পড়ুয়ারা। |
|
ছাত্র বিক্ষোভে বন্ধ রাজ কলেজ। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে তিনটি হস্টেল। দু’টি ছাত্রাবাস ও একটি ছাত্রীনিবাস। তিনটি হস্টেলেই দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে বলে আবাসিকদের অভিযোগ। এ দিন ঝাড়গ্রামের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রদেব ভট্টাচার্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। পরে বিকেলে অধ্যক্ষ কিশোরকুমার রাঢ়ী হস্টেলে গিয়ে আবাসিক পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আবাসিকরাও জানিয়ে দেন, দাবিপূরণে উপযুক্ত পদক্ষেপ শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কলেজ খুলতে দেবেন না। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, সমস্যা সমাধানের জন্য বুধবার ফের আলোচনায় বসা হবে।
জঙ্গলমহলের অশান্তির কারণে ২০০৭ সালের পর বছর তিনেক রাজ কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করা যায়নি। গত বছর ছাত্র সংসদে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন এসএফআইয়ের ‘আক্রান্ত’ কর্মী-সমর্থকদের দায়ের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট। ফলে, ছাত্রসংসদ গঠন করা যায়নি। যে কারণে এখন ডান ও বাম দুই ছাত্র সংগঠনই আবাসিকদের আন্দোলনের প্রতি সমান ‘সহানুভূতিশীল’। টিএমসিপি’র শহর-নেতা রথীন মণ্ডল বলেন, “আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের দাবিগুলি অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। তবে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার বিপক্ষে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর অনুরোধ জানিয়েছি।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৌমেন মাহাতোর বক্তব্য, “কলেজ ও হস্টেলের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার একটিও বাস্তবায়িত হয়নি। আবাসিক পড়ুয়াদের আন্দোলনকে তাই আমরা নৈতিক-সমর্থন জানিয়েছি।” |
|