বোয়িং সংস্থার ‘ড্রিমলাইনার’ বা স্বপ্ন-বিমান কারা চালাবেন, তা নিয়ে চাপান-উতোর আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার এক দল পাইলট ধর্মঘটও করেছেন। ৯৮ জন পাইলটকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার জেরে এয়ার ইন্ডিয়ার আন্তর্জাতিক উড়ানসূচি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।
অথচ সেই স্বপ্ন-বিমান ঠিক কবে ভারতের আকাশে উড়বে, নিশ্চিত করে বলতে পারছে না এয়ার ইন্ডিয়া। এই ধরনের ২৭টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৬৪ জন পাইলট ইতিমধ্যেই ওই বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু বিমানই এসে পৌঁছয়নি। ফলে প্রশিক্ষিত পাইলটদের বড় অংশ তিন মাস কার্যত বাড়িতে বসে। নতুন বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে তাঁরা যে পুরনো বিমান চালাতে পারবেন না!
তিন মাস ধরেই শোনা যাচ্ছে, যে-কোনও মুহূর্তে এসে পড়বে বোয়িং-৭৮৭। কিন্তু আসছে না। একই আকারের অন্য বিমানের তুলনায় ২০% কম জ্বালানি লাগে ড্রিমলাইনারে। তাই জ্বালানির দাম যত বাড়ছে, ততই চাহিদা বাড়ছে স্বপ্ন-বিমানের। জাপানের বিমান সংস্থা ‘জাল’, ‘অল নিপ্পন এয়ারলাইন্স’ এবং ইথিওপিয়ার বিমান সংস্থা এই বিমান ব্যবহার করছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার এক কর্তা জানান, ভারতে ২৫৮ জন যাত্রী নিয়ে উড়বে স্বপ্ন-বিমান। প্রথম ছ’সপ্তাহ ভারতের এক শহর থেকে অন্য শহরে যাবে বিমানটি। প্রথমে উড়বে দিল্লি-মুম্বই রুটে। তার পরে আসবে কলকাতাতেও। সংস্থা সূত্রের খবর, ২০০৮ সালেই ওই বিমানের ভারতে আসার কথা ছিল। আমেরিকার সিয়াটেলে বোয়িং কারখানায় ধর্মঘটের কারণে এবং ওই বিমানের কয়েকটি যন্ত্রাংশ বদলের জন্য চার বছর দেরি হয়ে যায়। এয়ার ইন্ডিয়া প্রথমে ৫০ কোটি এবং পরে ৭১ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চায়। আলাপ-আলোচনার পরে দু’পক্ষ একটি অঙ্কে রাজি হয়, যা সরকারি ভাবে জানাতে কেউই রাজি নয়।
কিন্তু তার পরেও দেরি। দিল্লির খবর, বিষয়টি আইন মন্ত্রকের বিবেচনাধীন। মঙ্গলবার দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে এ দেশে বোয়িংয়ের প্রধান দীনেশ কেসকর ড্রিমলাইনারের ভারতে আসার সময় এবং ক্ষতিপূরণের অঙ্ক সম্পর্কে সব প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন। পূর্বতন এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের দাবি, ড্রিমলাইনার চালাবেন শুধু তাঁরাই। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, পূর্বতন ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের পাইলটদেরও সেই সুযোগ দেওয়া হবে। তাই ধর্মঘটে নামেন পাইলটদের একাংশ। গত কয়েক মাসে একের পর এক আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল করে দিতে হয়। এর মধ্যেই সিঙ্গাপুরে ড্রিমলাইনার চালানোর প্রশিক্ষণও চালিয়ে যান কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু স্বপ্ন-বিমানেরই যে দেখা নেই! |