পুলিশের মারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক নির্মাণ কর্মীর, এমন অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার দুর্গাপুর থানার সামনে দেহ রেখে বিক্ষোভ দেখালেন মৃতের পরিজন ও সহকর্মীরা। পুলিশের অবশ্য দাবি, আটক করার পরে ওই যুবক চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দেওয়ায় গুরুতর জখম হন। তার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পরে মৃতের পরিজনদের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে।
পেশায় রাজমিস্ত্রী সানোয়ার শেখ সোমবার এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদবের কাছে অভিযোগ করেন, গত ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাঁরা যখন বিদ্যাপতি রোড ও জয়দেব রোডে কাছে জঙ্গলের পাশের রাস্তা ধরে ফিরছিলেন, পুলিশ তাঁদের দুষ্কৃতী সন্দেহে তাড়া করে। ভয়ে তাঁরা দৌড়তে শুরু করেন। উত্তম মাল (৩৩) নামে এক জনকে পুলিশ ধরে ফেলে। সানোয়ার শেখ অভিযোগ করেন, পুলিশ নিয়ে গিয়ে মারধর করলে উত্তমবাবু অসুস্থ হন। তাঁকে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে, পরে বহরমপুর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। সোমবার সকালে তিনি মারা যান। এডিসিপি (পূর্ব) অবশ্য দাবি করেন, আটক করার পরে চলন্ত গাড়ি থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালাতে গিয়ে ওই যুবক জখম হন। |
এ দিন সকালে দেহ নিয়ে এসে দুর্গাপুর থানায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মৃতের পরিজন ও সহকর্মীরা। তাঁদের দাবি, ‘দোষী’ পুলিশকর্মীদের শাস্তি দিতে হবে। পুলিশ বারবার বিক্ষোভ থামানোর অনুরোধ জানালেও ফল হয়নি। বিকেলে পুলিশ আধিকারিকরা উত্তমবাবুর বাবা নিমাই মালকে ডাকেন। নিমাইবাবু তাঁদের জানান, ছেলে মারা যাওয়ায় পরিবার আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পুলিশ যেন সে দিকটা দেখে। পুলিশ আধিকারিকেরা বিষয়টি তাঁকে লিখিত ভাবে জানাতে বলেন। ঘটনার তদন্ত করে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাসও দেওয়া হয়। ‘দুর্গাপুর সিভিল কন্ট্রাক্টরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি ইসমাইল শেখ জানান, পুলিশের আশ্বাস পাওয়ার পরে বিক্ষোভ থামে। নিমাইবাবুরা এর পরে দেহ নিয়ে বহরমপুর রওনা দেন। সেখানেই ময়না-তদন্ত হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
নিমাইবাবুরা দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক আয়েষা রানির সঙ্গেও দেখা করে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান। মহকুমাশাসক জানান, ওই পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের বিষয়টি দেখবে সেখানকার প্রশাসন। তিনি জানান, এমন অভিযোগ যাতে আর না ওঠে সে ব্যাপারে পুলিশকে সজাগ থাকার আর্জি জানাবেন। এসিপি (পূর্ব) ইন্দ্রনীল কাঞ্জিলাল বলেন, “পুলিশের তরফে ওই পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের সুযোগ নেই। নিমাইবাবুর আর্জি আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়ে দেব।’’ এডিসিপি সুনীল যাদব জানান, বিশ্বাসযোগ্যতা যাতে ক্ষুন্ন না হয়, সে জন্য অভিযোগের তদন্ত করবে গোয়েন্দা বিভাগ। |