গ্রেফতার তিন
উদ্ধার বিবাহিত নাবালিকা
ভিনরাজ্যের পাত্রের সঙ্গে নাবালিকা মেয়ের আপত্তিকে গুরুত্ব না দিয়েই বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরেরদিন ভোরে নতুন বধূকে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হওয়ার তোড়জোড় করছিলেন পাত্রপক্ষ। স্টেশনে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন গাড়ির। কিন্তু তার আগেই বিয়েবাড়িতে পৌঁছে গেল পুলিশের গাড়ি। পুলিশ গ্রেফতার করল পাত্র-সহ ৩ জনকে। নাবালিকাকেও উদ্ধার করে নিয়ে আসা হল থানায়। সোমবার ভোরে মালদহের রতুয়ার পরাণপুর মালদহ পট্টিতে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসার পর তাকে মালদহে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে। তাঁরাই কাউন্সিলিং-এর ঠিক করবেন নাবালিকাকে বাড়িতে না কী হোমে রাখা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরো হলেন পাত্র মহম্মদ সেলিম, পাত্রের বাবা আবদুল রশিদ এবং পাত্রের আত্মীয় মহম্মদ আহেমন। তাদের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলার বাদলিটান্ডা এলাকার। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইনে তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই ঘটনায় যারা জড়িত সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ছবি তুলেছেন বাপি মজুমদার।
ওই নাবালিকার বাবা আনেশ মিঁয়া ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি সেতারা বিবিকে বিয়ে করেন। তাঁদের চার সন্তানের মধ্যে নাবালিকা প্রথম পক্ষের সন্তান। অভাবের সংসারে চতুর্থ শ্রেণির পর মেয়েটির পড়াশুনো বন্ধ হয়ে যায়। সে ভ্যান চালক বাবাকে সাহায্য করতে মায়ের সঙ্গে দিনমজুরিও করে। সম্প্রতি বাবা ও ঠাকুর্দা জাব্বার মিঁয়া উত্তরপ্রদেশের বাদলিটান্ডা এলাকার পাত্র মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রথম থেকেই বিয়েতে আপত্তি জানাতে থাকে ওই নাবালিকা। সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না করার কথা জানালেও তার কথায় কেউ কান দেননি বলে অভিযোগ। এরপর গত শনিবার পাত্র-সহ ৩ জন গ্রামে এসে পৌঁছায়। রবিবার রাতে বিয়ে হয়। বিয়েতে তার সৎ মা সেতারা বিবিরও আপত্তি ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে ওই নাবালিকা। কিন্তু এদিন ভোররাতে ঘটনার কথা জানতে পেরে বিয়েবাড়িতে হানা দেন রতুয়ার ওসি সুমন্ত বিশ্বাস। পুলিশের কথায়, এক শুভাকাঙ্খী ফোন করে পুলিশকে সব জানায়। পুলিশ হানা দিতে বালিকার বাবা ও ঠাকুর্দা পালিয়ে যায়। এদিন রতুয়া থানায় বসে ওই নাবালিকা জানায়, বাবা ও ঠাকুর্দা জোর করেই বিয়ে দিচ্ছিলেন। আপত্তি জানালেও কেউ কথা শোনেননি। স্কুলে পড়ার সময়েই শুনেছিলাম ১৮ বছরের আগে বিয়ে বেআইনি। বাধ্য হয়েই বিয়ে করতে হয়।এখন কী হবে তা জানি না। পাত্রপক্ষের খরচে বিয়ে ছাড়াও পাত্রপক্ষের কাছ থেকে বাবা-ঠাকুর্দা টাকাও নিয়েছে বলে সে পুলিশকে জানিয়েছে। যদিও মা সেতারা বিবি কথা বলতে চাননি। পাত্রের বাবা ধৃত আবদুল রশিদ জানায়, আত্মীয় আহেমনের সঙ্গে রতুয়ার কাহালা র একজনের পরিচয় রয়েছে। ছেলের জন্য আমরা পাত্রী খুঁজছিলাম। বিয়ের খরচ আমরাই দিয়েছিলাম। পরাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য সত্যজিৎ দাস বলেন, ‘দুঃস্থ পরিবার। পাত্র পেয়ে গোপনে বিয়ের বন্দোবস্ত করে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.