দেশের অর্থনীতির চাকা ঢিমেতালে এগোনোয় ব্যবসা মার খাওয়ার আশঙ্কা এ বার নির্মাণ-যন্ত্রপাতি শিল্পেও। তাদের ইঙ্গিত, ব্যবসা বাড়বে প্রায় ১৫% কম হারে।
একই সঙ্গে অবশ্য থমকে থাকা বড় প্রকল্প দ্রুত রূপায়ণের হাত ধরে কিছুটা বাজার বাড়ানো সম্ভব বলে দাবি নির্মাণ-যন্ত্র শিল্পমহলের। তাদের মতে, নীতি নির্ধারণের চেয়েও এই বিষয়টিই জরুরি। কারণ বাস্তবের মাটিতে বল না-গড়ানো পর্যন্ত শুধু নীতি তৈরি করে কাজের কাজ হবে না।
বস্তুতপক্ষে, পরিকাঠামো শিল্পের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত নির্মাণ-যন্ত্র শিল্পও। দেশের আর্থিক আবহাওয়ায় মেঘের সঞ্চার হওয়ায় উৎপাদন শিল্পের পাশাপাশি ধাক্কা খেয়েছে পরিকাঠামো শিল্পও। আর তার জেরে প্রভাব পড়েছে নির্মাণ- যন্ত্রপাতি শিল্পের উপরেও। সংশ্লিষ্ট শিল্পের হিসেবে, পাঁচ বছরে তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির হার ১৫-১৭%। এই শিল্পে দেশের বৃহত্তম সংস্থা জেসিবি ইন্ডিয়া-র এমডি তথা সিইও বিপিন সোঁধির আশঙ্কা, এ বছরে ব্যবসার উপর ১৫% প্রভাব পড়তে পারে।
কিন্তু কেন ব্রিটিশ বহুজাতিক জেসিবি-র ভারতীয় শাখাটির এই আশঙ্কা? সোঁধির দাবি, ২০০৮-’০৯-এর মন্দার আঘাতের ক্ষত শুকোনোর পরপরই সুদের চড়া হার, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদির জন্য লগ্নিকারীদের আস্থায় চিড় ধরে। অনুমোদনের পরেও বড় বড় জাতীয় প্রকল্পগুলি নানা কারণে আটকে পড়ার মতো ঘটনা পরবর্তী কালে তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে। জমি-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সমস্যায় পড়ছে বেসরকারি শিল্পও। ফলে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে লগ্নিকারীরা এখনও কিছুটা বিচলিত।
এই পরিস্থিতিতে সংস্কার ফের জোরদার করার পক্ষে গোটা শিল্পমহল। সেই মতকে সমর্থন করলেও সোঁধি বেশি জোর দিচ্ছেন নীতির প্রয়োগের উপর। তাঁর মতে, নীতি নির্ধারণের চেয়েও এখন আগে দরকার নীতি কার্যকর করা। তাঁর যুক্তি অনুমোদনের পরেও আটকে থাকা গোটা কয়েক প্রকল্প (যেমন রাস্তা, আবাসন, ইস্পাত) দ্রুত চালু হলে নতুন চাহিদা তৈরি হবে। শিল্পের বিকাশ ঘটবে। সরকারের মানসিকতার উপরেই জোর দেন তিনি। যেমন তাঁর মতে, বিহারে সমস্যা অনেক ছিল। কিন্তু সেখানকার মানুষ উন্নয়ন চেয়েছিলেন। এবং সরকার সেই ইচ্ছে কার্যকর করতে পেরেছিল বলেই উন্নয়নের চাকা এগিয়েছে। লোকসভা ভোটের বছর দেড়েক আগের এই সময়টাকে তাই সেরা সুযোগ হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
ব্যবসা বাড়াতে নতুন পণ্য এবং দেশে-বিদেশে নতুন বাজার তৈরির উপর জোর দিচ্ছে সংস্থা। দেশের গ্রামীণ এলাকা এমনিতেই সংস্থাটির ব্যবসার মূল সূত্র। সেই সব এলাকায় বিপণন পরিকাঠামো জোরদার করছে জেসিবি ইন্ডিয়া। |