গোষ্ঠী সংঘর্ষের কারণে একে বরাত কম আসছে। তার উপর নিরাপত্তার প্রশ্নে নামনি অসমে যেতে ভয় পাচ্ছেন ডুয়ার্সের ঢাকিরা। পুজোর উদ্যোক্তারা অনেকে যোগাযোগ করলেও তাই তাঁরা কথা দিতে পারছেন না। প্রতি বছর ডুয়ার্সের শতাধিক ঢাকি নামনি অসমের পুজো মণ্ডপগুলিতে ঢাক বাজাতে যান। অথচ এ বছর অসমের অশান্ত পরিস্থিতির জেরে দুর্গা পুজোর বরাত পাওয়া নিয়ে চিন্তিত ওই ঢাকিরা।
গোষ্ঠী সংঘর্ষের জের কাটিয়ে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না-হওয়ায় গত বারের চেয়ে অনেক কম সংখ্যায় পুজো উদ্যোক্তারা যোগাযোগ করেছেন। অন্যান্য বছর পুজোর মাস তিনেক আগেই ঢাকে কাঠি পড়ে। আলিপুরদুয়ারের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ঢাকি পাড়ায় অভিজ্ঞ ঢাকিরা পুজোর আগে এ সময় ছেলে-ছোকরাদের নিয়ে মহড়া শুরু করে দেন। দল বেঁধে খেমটা, কাহারবা, দাদরা, তেতাল বাজানোর পাশাপাশি ঢাক নিয়ে নানা কসরতের অনুশীলন শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর অসমের পরিস্থিতি নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা সকলেই। আশা করছেন পুজোর আগে পরিস্থিতি শান্ত হবে। আলিপুরদুয়ার ১১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নারায়ণ রায় জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে গুয়াহাটির বড় বড় ক্লাবগুলিতে ঢাক বাজান। তাঁর নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৩৫ জনের একটি দল অসমে বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলোতে ঢাক বাজাতে যায়। এক একজন ঢাকি ৮-১৫ হাজার টাকা পযর্ন্ত আয় করেন এই মরসুমে। খাওয়া-দাওয়া গাড়ি ভাড়ার খরচ দেন উদ্যোক্তারাই। সময় কিছু বাড়তি রোজগারের আশায় সারা বছর ধরে অপেক্ষায় থাকেন তাঁরা। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার বা জলপাইগুড়িতে বড় ধরনের বরাত না-পাওয়ায় অসম, নাগাল্যান্ড, মণিপুরের মতো জায়গায় পাড়ি জমান ঢাকিদের একটা বড় অংশ। নারায়ণ বাবু বলেন, “এ বছর নামনি অসমে গোলমালের জেরে এলাকা ছেড়ে শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন বহু মানুষ। মাঝে মধ্যে ট্রেনে হামলার খবর শুনছি। তাতেই চিন্তিত। তা ছাড়া গত বারের চেয়ে এবার অনেক কম সংখ্যক পুজো কমিটি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। গন্ডোগোলের জেরে বাজেটে কাটছাঁটের কথা বলছে অনেক পুজো কমিটি। তাতে দরদামের সুযোগ কমেছে।”
ঢাকবাদক গোপাল রায় জানান, নিরাপত্তার কারণে অসমে পুজোয় ঢাক বাজাতে ঢাকিরা যেতে চাইছেন না। অসমের পরিস্থিতি এরকম চলতে থাকলে অনেক ঢাকি যাবেন না। আব্বাসউদ্দিন পুরস্কারপ্রাপ্ত পাটকা পাড়ারা ঢোল বাদক বলরাম হাজরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে নাগাল্যান্ডের একটি পুজোয় ঢাক বাজাতে যান তিনি। এবারও সংগঠকরা যোগাযোগ করে টাকাও পাঠিয়েছেন। কিন্তু অসমে পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় থাকায় ট্রেনের টিকিট কাটেননি। বলরামবাবু বলেন, “দিনহাটা, গোসানিমারি, বামনহাট, আলিপুরদুয়ার থেকে বহু ঢাকি অসম, নাগাল্যান্ড, মণিপুরে যান ঢাক বাজাতে যান। অসমের গণ্ডোগোলের জেরে এ বছর তাঁরা চিন্তায় রয়েছে।”
বিঘ্ন পরিষেবা। সর্ট সার্কিটে যন্ত্রাংশ পুড়ে যাওয়ায় বিঘ্নিত হল ফালাকাটার জটেশ্বর এলাকার বিএসএনএল পরিষেবা। রবিবার দুপুরে এক্সচেঞ্জের বন্ধ ঘর থেকে ধোঁয়া বার হতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। খবর যায় ধূপগুড়ি দমকল কেন্দ্রে। তবে এক্সচেঞ্জের যন্ত্রাংশ দম আসার আগেই পুড়ে যায়। এলাকার মোবাইল ও ল্যান্ডলাইন পরিষেবা কত দ্রুত স্বাভাবিক হবে তা জানাতে পারেননি কতৃর্পক্ষ। |