বিপর্যয় মোকাবিলার কাজ মসৃণ করতে সব জেলায় ডিএম-দের মাথায় রেখে সমন্বয় কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রবিবার শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে চার জেলার জেলশাসকদের নিয়ে বৈঠকের পর ওই কথা জানান দমকল মন্ত্রী জাভেদ খান। তিনি সিভিল ডিফেন্স এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরেরও ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, “আগামী ছয় থেকে এক বছরের মধ্যে নতুন দিক তৈরি করা হবে। জেলাশাসককে মাথায় রেখে প্রত্যেক জেলায় তিনটি দফতরের সমণ্বয় কমিটি তৈরি করা হবে। সেক্ষেত্রে কোনও বিপর্যয় ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। এটি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আমার বিশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সমন্বয়ের কথা ভেবেই তিন দফতরের একজন মন্ত্রী রেখেছেন।” |
দমকল সূত্রের, বর্তমানে যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা বড় কোনও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তিন দফতরের একসঙ্গে ছুটতে কলকাতার নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হয়। অনেক সময় দমকল ঘটনাস্থলে গেলেও অন্য দফতরের কর্মীদের পাওয়া যায় না। দার্জিলিংয়ে ভূমিকম্প, বন্যা, অগ্নিকাণ্ড এবং ধসে বার বার সমণ্বয়ের অভাব সামনে এসেছে বলে অভিযোগ। মন্ত্রী বলেন, “কোথাও বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে তিন দফতরের কর্মীদের প্রয়োজন হয়। জল দেওয়ার পাশাপাশি অনেক সময় ঘরের দরজা কেটে ভেতরে ঢুকতে হয়। সেক্ষেত্রে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের প্রয়োজন। এ ছাড়া দার্জিলিংয়ে মাঝে মধ্যে ধস নামার ঘটনা ঘটে। ভূমিকম্পের প্রবণতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তিন দফতর একসঙ্গে কাজে নামলে মোকাবিলা করা সহজ হবে।” মন্ত্রী জানান, শুধু সমণ্বয় কমিটি তৈরি করেই কাজ শেষ করা হবে না। তাদের জন্য আলাদা অফিস বিল্ডিং, ব্যারাক, অত্যাধুনিক গাড়ি এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে। ইতিমধ্যে সিভিল ডিফেন্সকে বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক গাড়ি ও যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে। কংক্রিট, লোহা কাটার যন্ত্র বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীদের কাছে থাকবে। তা ছাড়া জেনারেটর রাখার গাড়িও সিভিল ডিফেন্সে সামিল করা হয়েছে। আজ, সোমবার সকালে শিলিগুড়ি হিন্দি হাইস্কুলে অত্যাধুনিক নতুন গাড়ি দিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলার মহড়া দেবে সিভিল ডিফেন্স। তিনি বলেন, “গত সরকারের প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনা করেনি। দমকল কেন্দ্রের দিকেও নজর দেয়নি। আশা করছি খুব দ্রুত পুরো অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।”
তিনি জানান, বর্তমানে রাজ্যে ১০৯ টি দমকল কেন্দ্র রয়েছে। ছয়টি মহকুমায় কোনও দমকল কেন্দ্র নেই। সেই মহকুমাগুলিতে দমকল কেন্দ্র করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ছাড়াও মিরিকে একটি দমকল কেন্দ্র স্থাপনের ব্যপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দার্জিলিং শহরে যে দমকল কেন্দ্র রয়েছে তার উন্নতি করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, “মিরিকে দমকল কেন্দ্রের ব্যপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সোমবার মিরিকে যাব। দার্জিলিংয়ে জলের অভাব রয়েছে। আগুন নেভানোর কাজে সমস্যায় পড়তে হয়। সেখানে জলাধার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
এ দিন মন্ত্রী হাতিঘিষাতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র তৈরির কাজ পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে ফিরে সার্কিট হাউসে তিনি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে দফতরের সচিবও ছিলেন। দমকল কেন্দ্রের অবস্থা খতিয়ে দেখতে আজ, সোমবার তিনি দার্জিলিংয়ে যাবেন। |