খেলার খবর |
বহরমপুরের ছেলেরাই জিতে
নিলেন সাঁতার প্রতিযোগিতা
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
|
|
বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ৮১ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতায় ‘ঘরের ছেলে’দের জয়-জয়কারে রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বহরমপুরে উৎসবের মেজাজ।
ভাগীরথীর বুকে ওই প্রতিযোগিতায় বহরমপুর সুইমিং ক্লাবের রাকেশ বিশ্বাস প্রথম হন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে বহরমপুর সুহৃদ সংঘ সুইমিং ক্লাবের চন্দন সরকার ও পলাশ বারিক। রাকেশ সময় নিয়েছেন ১০ ঘন্টা ৪১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড। চন্দনের ১০ ঘন্টা ৪৬ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ও পলাশের ১০ ঘন্টা ৪৭ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড সময় লেগেছে। |
|
জিয়াগঞ্জে শুরু হল ১৯ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতা। |
এদিন জঙ্গিপুরের আহিরন ঘাট থেকে ২৭ জন প্রতিযোগী বহরমপুর গোরাবাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে সাঁতার শুরু করে। তার মধ্যে বহরমপুরেরই ছিল ১৫ জন। ‘ঘরের ছেলেদের’ ভাল ফলের আশায় বুক বেঁধে ভাগীরথীর দু-পাড়ে ভিড় করেন বহরমপুর-সহ আশপাশের কয়েক হাজার বাসিন্দা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হয়েছিলেন বহরমপুর গোরাবাজার ঘাটে। এদিন বিকেল ৪টে ৯ মিনিটে রাকেশ গোরাবাজারের নিজের চেনা ঘাটে বাঁধা পড়েন, তখন সোল্লাসে ফেটে পড়েন ভাগীরথীর দু-পারের মানুষ। এর পরে চন্দন ও পলাশ ১ মিনিটের ব্যবধানে পর পর ‘ফিনিশিং পয়েন্ট’ ছুঁতেই দর্শকদের মধ্যে তখন বাঁধনভাঙা চিৎকার। কোমর জলে দাঁড়িয়ে তাঁরা দু-হাত তুলতেই পাড় বরাবর দাঁড়ানো হাজার-হাজার দর্শক হাততালি দিয়ে তাঁদের অভিবাদন জানান। ঘাটে পৌঁছানো মাত্র তাঁদের লাল কম্বল গায়ে জড়িয়ে গ্রিনরুমে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে আগে থেকে চিকিৎসক-নার্সদের নিয়ে গড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের টিম প্রস্তুত ছিলেন। |
|
জয়দীপ কর্মকারকে অভিনন্দন এক খুদের। সাঁতার প্রতিযোগিতা উপলক্ষে তিনি বহরমপুর এসেছিলেন। |
৬৯ তম এই সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজক সংস্থা মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন। এদিন সকাল ৫টা ২৫ মিনিটে আহিরন ঘাট থেকে ৮১ কিমি ও দুপুর দেড়টা নাগাদ জিয়াগঞ্জ সদরঘাট থেকে বহরমপুর গোরাবাজার ঘাট পর্যন্ত পুরুষ ও মহিলা বিভাগের ১৯ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ৮১ কিলোমিটারে কোনও মহিলা প্রতিযোগী ছিলেন না। তবে মহারাষ্ট্র থেকে ছিলেন ৪ জন, গুজরাট ও ত্রিপুরা থেকে এক জন করে এবং প্রতিবেশী বাংলাদেশের ৩ জন প্রতিযোগী ভাগীরথীর জলে নামেন।
তবে ১৯ কিলোমিটারে মহিলা বিভাগে ২৩ জন ও পুরুষ বিভাগে ৩৪ জন প্রতিযোগী ছিলেন। এই প্রতিযোগিতায় মহিলা বিভাগে প্রথম হন উত্তর ২৪ পরগণার শ্যামনগরের প্রিয়াঙ্কা কর্মকার। তাঁর সময় লেগেছে ২ ঘন্টা ১৭ মিনিট ২৬ সেকেন্ড। দ্বিতীয় কলকাতার মধুলেখা হাজরা, তৃতীয় হয়েছেন সিদ্ধি জিতেন্দ্র কৈয়াল। তাঁদের সময় লেগেছে যথাক্রমে ২ঘন্টা ১৯ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড এবং ২ ঘন্টা ২৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড।
এ ছাড়াও ১৯ কিলোমিটারের পুরুষ বিভাগে সবাইকে টেক্কা দিয়ে খিদিরপুর সুইমিং ক্লাবের সদস্য বেহালার বাসিন্দা আকাশ দেবনাথ ২ ঘন্টা ১২ মিনিট ১৭ সেকেন্ডে প্রথম স্থান পান। দ্বিতীয় হয়েছেন বহরমপুর সুইমিং ক্লাবের চিরঞ্জিৎ বিশ্বাস। তাঁর সময় লেগেছে ২ ঘন্টা ১৩ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। আর ২ ঘন্টা ১৬ মিনিট ১ সেকেন্ডে তৃতীয় হয়েছেন বাংলাদেশ সুইমিং ক্লাবের ফয়জল আহমেদ।
এদিন ১৯ কিমি মহিলা বিভাগে রাজ্যের ৬ জন, মহারাষ্ট্রের ১৩ জন, গুজরাটের ২ জন ও বাংলাদেশের ২ জন প্রতিযোগী ছিলেন। সেই সঙ্গে পুরুষ বিভাগে রাজ্যের ১৩ জন, মহারাষ্ট্রের ৮ জন, ঝাড়খন্ড-অসাম-বিহার-দিল্লি থেকে এক জন করে, গুজরাট-ত্রিপুরা-কর্ণাটক থেকে দুজন করে এবং বাংলাদেশের প্রতিযোগী ছিলেন তিন জন।
|
—নিজস্ব চিত্র। |
|