জীবনের সেরা মুহূর্ত: সুনীল
নেহরু কাপ জয়ের হ্যাটট্রিক করার দিনে সুনীল ছেত্রী বলে দিলেন, “এ বারের ট্রফি জেতাটাই সেরা। কারণ আগের দু’বার আমরা ক্যামরুনের মতো শক্তিশালী টিমকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হইনি। এটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত।”
আগের দু’বার বব হাউটন এবং ভাইচুং ভুটিয়ার সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়েছিল সাফল্য। এ বার তিনিই অধিনায়ক। টুর্নামেন্টের সেরাও। সে জন্যই কি এই জয়কে এগিয়ে রাখছেন? স্টেডিয়ামে নাগাড়ে চলছিল মেক্সিকান ওয়েভ। বিস্মিত সুনীল বললেন, “সত্যি বলছি, আমিও টুর্নামেন্ট শুরুর সময় ভাবিনি চ্যাম্পিয়ন হব। এত নতুন ছেলে। আমি নিশ্চিত যে, ক্যামেরুনের সঙ্গে খেলার আগে আপনারা অনেকেই আমার মতো ভেবেছিলেন যে আমরা চার-পাঁচ গোল খাব। এ রকম জয় অনেক বেশি স্মরণীয় হয়। সমর্থকরাও প্রতিটা মিনিট আমাদের জন্য চেঁচিয়েছেন।”
বাইরে অপেক্ষায় মিডিয়ার ভিড়। সই নিতে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন আঠারো থেকে আশির মানুষ। এ গিয়ে দিচ্ছেন তাঁর জাতীয় দলের নম্বর, ১১ লেখা জার্সি। দেখে সুনীলের প্রতিক্রিয়া, “এ রকম জয় বারবার দরকার। দিল্লি আমার লাকি জায়গা। আমি এখানকার ছেলে। সাফ কাপ জিতেছি। তা সত্ত্বেও বলব আজকের জয়টা অন্য রকম। দু’চারজন পুরানোর পাশে অনেক নতুন ছেলে। একেবারে নতুন চেহারার ভারত। তা নিয়েই নতুন ফর্মেশন তৈরি করেছিলেন কোচ। সবাই সেটা মেনে এগিয়েছে। আমি নিজে প্রতিদিন সবাইকে নিয়ে বসেছি। আজও ২-১ পিছিয়ে থাকার সময় বলি, যা খেলছি সেটা গর্ব করার পক্ষে যথেষ্ট।”
অধিনায়কের মতোই প্রচণ্ড তৃপ্ত দেখাচ্ছিল কোচ কোভারম্যান্সকে। ভারতের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম টুর্নামেন্টেই দুর্দান্ত সাফল্য। তবুও অধিনায়কের মতো উত্তেজিত নন, বরং যথেষ্ট শান্ত তিনি। নেদাল্যান্ডসের ইউরো কাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন বলেই হয়তো। বারবার বলছিলেন, “আমার কোচিং জীবনের অন্যতম সেরা দিন! এটা ছেলেদের একতার জয়! অনবদ্য, অবিশ্বাস্য জয়! ক্যামেরুন প্রচণ্ড শক্তিশালী টিম ছিল। অনেক জায়গায় ওদের থেকে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। কিন্তু ছেলেরা প্রতিদিনের কঠোর পরিশ্রমের ফল পেল।”
সেই পয়া সাদা জামা আর ঘিয়ে প্যান্ট। ফাইনালের রিজার্ভ বেঞ্চে বারবার তাঁকে দেখা গেল উত্তেজিত হতে। ভারত গোল খাওয়ার পর তো জলের বোতলে লাথিও মারলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন অবশ্য ফুরফুরে মেজাজে। “গতকাল অনুশীলনে ছেলেরা আটটা পেনাল্টি মেরেছিল। কোনওটায় গোল হয়নি। রাতে সবাইকে ডেকে বলেছিলাম, কাল ফাইনালে সুযোগ পেলে যেন এ রকম না হয়। সুনীলের পেনাল্টি গোলে আমরা সমতা ফেরাই। পরের পাঁচটা গোলই হয়েছে পেনাল্টি থেকে।”
দিল্লির রাস্তায় রাত এগারোটাতেও সুব্রত পাল-রহিম নবি-মেহতাব হোসেনদের টিম-বাস ঘিরে চলছে উৎসব, ব্যান্ড-তাসা-পতাকা নিয়ে উদ্দাম নৃত্য। পুরস্কার মঞ্চ থেকেই ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল ঘোষণা করলেন, “১ কোটি ১২ লাখ টাকা (দু’লাখ ডলার) পুরষ্কার দেওয়া হবে ভারতীয় দলকে।”
ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার পেলেন রহিম নবি। এ দিন দুর্দান্ত খেলেছেন। সুনীলের মতোই দলকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। টিম বাসে ওঠার সময় পাণ্ডুয়ার ছেলে বললেন, “ক্যামেরুনকে এতদিন শুধু টিভিতেই দেখেছি। বিশ্বকাপে ওদের খেলা দেখে অবাক হয়েছি। তাদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন! স্বপ্ন মনে হচ্ছে!”
ফেরার সময় পুর্নিমার চাঁদের আলো এসে পড়ছিল টিম বাসে। মনে হল, ডাচ-কোচের হাত ধরে ভারতীয় ফুটবলে হয়তো নতুন আলো এসে পড়ল।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.