রবিবার সন্ধের আগেই সব কাজ সেরে বসে পড়েছিলাম টিভির সামনে। ঘণ্টা আড়াই সময়টা নেহাত ফেলনা গেল না। ক্যামেরুনের মতো আফ্রিকান শক্তির বিরুদ্ধে লড়ে সুনীল-নবিরা যে ভাবে নেহরু কাপ চ্যাম্পিয়ন হল তা সত্যিই উপভোগ্য। ভাল লাগল এই ভারতীয় দলের সাহস দেখে। যা আগের দু’টো নেহরু কাপ জেতা বব হাউটনের দলের থেকে অনেক বেশি।
কী সেই ব্যাপারগুলো, যা ডাচ কোচ উইম কোভারম্যান্সের ভারতকে আলাদা করে দিচ্ছে হাউটনের ভারতের থেকে?
দৌড়, দৌড় আর দৌড়: এই দলটা অনেক বেশি দৌড়ানোর ক্ষমতা রাখে। আর সেটা নব্বই এমনকী ১২০ মিনিট জুড়ে। আক্রমণের সময়ে যেমন দ্রুত সাত-আট জন উঠে যাচ্ছে, আবার ডিফেন্স করার সময়ও নেমে আসছে সে ভাবেই।
সাপোর্টিং অ্যাটাক: ফরোয়ার্ডে সুনীল-রবিনদের সাহায্য করার জন্য এই দলে অনেকে আছে। নবি থেকে মেহতাব, লেনি থেকে ক্লিফোর্ডতরুণ আর অভিজ্ঞের রসায়নটা জমাট রাখতে পেরেছেন কোভারম্যান্স। সামনে সুনীল অসাধারণ। দু’টো উইং ক্লিফোর্ড আর নবি বেশ ভাল ব্যবহার করছে। |
কোচের মগজাস্ত্র: হাউটনের থেকে কোভারম্যান্সকে এ ব্যাপারে অনেক উঁচুতে রাখব। অনেক বেশি আধুনিক। সবচেয়ে ভাল লেগেছে ওঁর ম্যাচ অনুযায়ী পরিকল্পনার ক্ষমতা। এই ক্যামেরুনের সঙ্গেই দু’দিন আগেই হেরেছিল ভারত। অথচ ফাইনালে অন্য রকম খেলল সুনীলরা। পুরো অন্য চেহারা। ক্যামেরুনের বিশ্ব র্যাঙ্কিং ৫৯। সুনীলরা যদিও হারাল ওদের দ্বিতীয় সারির দলকে। যারা টেকনিকের দিক থেকে খুব উন্নত নয়। তবে শারীরিক সক্ষমতায় আমাদের ছেলেদের থেকে বহু এগিয়ে। তাদের বিরুদ্ধে নবিদের নাছোড় লড়াই দারুণ লাগল। লড়াকু মানসিকতাটা নবি-মেহতাব তো বটেই এমনকী নির্মল-লেনিদের মতো জুনিয়রদের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে। কোভারম্যান্সের কৃতিত্ব এখানেও।
দ্বিতীয় সারির ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে জিতলেও ভারতের কৃতিত্ব বিন্দুমাত্র কমছে না। বরং নতুন ডাচ সিস্টেমের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার যখন চেষ্টা চলছে, সেই সময় এই জয় ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আমি চাই, কোভারম্যান্সই ভারতের কোচের পদে অনেক দিন থাকুন। সেই সঙ্গে মোটামুটি এই দলটাকেই ধরে রাখা হোক। তবে লালকমল (ভৌমিক) কিংবা ডেনসনের (দেবদাস) মতো কেউ কেউ এই দলে ঢুকে পড়লে সুনীলদের সামনে গোলের ঠিকানা লেখা পাস আরও বেশি আসবে। |