শুধু ছ’টি জেলাই নয়, শেষ পর্যন্ত গোটা রাজ্যকেই খরাকবলিত ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিল ঝাড়খণ্ড সরকার। যদিও বৃষ্টিপাতের নিরিখে সমগ্র ঝাড়খণ্ড রাজ্যকে খরাকবলিত বলে এখনও ঘোষণা করা যায় না বলেই মনে করছে আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়া দফতরের ব্যাখ্যা,কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিক গড় পরিমাণের থেকে অন্তত ১৯ শতাংশ কম হলে তখনই সেই রাজ্যকে খরা কবলিত হিসেবে ঘোষণা করা যায়। পটনা আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা আশিস সেন জানিয়েছেন, ৩১ অগস্ট পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধরা হয় ৮৪৪ মিলিমিটার। তবে এ বার ওই সময়ে বৃষ্টি হয়েছে ৭১৮ মিলিমিটার। অর্থাৎ স্বাভাবিকের থেকে ১৫ শতাংশ কম। এই আবহ-কর্তার অভিমত, ‘খরা কবলিত’ হওয়ার মতো পরিস্থিতি ঝাড়খণ্ডে হয়নি।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, মূলত ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) চাপে সমগ্র ঝাড়খণ্ডকে খরাকবলিত ঘোষণার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডাকে। রাজ্যের কৃষি এবং আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে গত ২৭ অগস্ট সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ঝাড়খণ্ডের ছ’টি জেলাকে (দেওঘর, দুমকা, সাহেবগঞ্জ, গোড্ডা, পশ্চিম সিংভূম এবং গুমলা) খরাকবলিত ঘোষণার প্রস্তাব গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ওই প্রস্তাব গ্রহণের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জেএমএম গোটা রাজ্যকে খরা কবলিত ঘোষণার দাবি তোলে।
শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঝাড়খণ্ডকে খরাকবলিত ঘোষণার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই ব্যাপারে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সত্যানন্দ ঝা কোনও রকম রাজনৈতিক বিতর্কে না-গিয়ে বলেন, “বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম তো হয়েছেই। এ বার সময়ে বৃষ্টি না-হওয়ার কারণে কৃষির প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। অসময়ের বৃষ্টি দিয়ে চাষের সেই ক্ষতি পূরণ করা যাবে না। সমস্ত রিপোর্ট বিবেচনা করেই সমগ্র রাজ্যকে ‘খরাকবলিত’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভা নিয়েছে।”
পটনার আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে, বর্ষাকালীন বৃষ্টিপাতের নিরিখে ঝাড়খণ্ডের থেকে বিহারের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ। আশিসবাবু জানান, ৩১ অগষ্ট পর্যন্ত বিহারের স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধরা হয় ৮০১ মিলিমিটার। সেখানে বৃষ্টি হয়েছে ৫৯৩ মিলিমিটার। অর্থাৎ স্বাভাবিকের থেকে ২৬ শতাংশ কম। তবুও কিন্তু এখনও সমগ্র বিহারকে খরাকবলিত ঘোষণা করেনি নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। |