বাড়ির কাছেই মাথায় লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হল যুব মোর্চার এক নেতাকে।
শুক্রবার গভীর রাতে ওয়াংদে ভুটিয়া (২৯) নামে ওই যুব নেতাকে খুন করে রাস্তার উপরেই ফেলে রেখে যায় দুষ্কৃতীরা। শনিবার সকালে দেহের খোঁজ মেলার পর ভুটিয়াবস্তি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। র লোকজন দেহটি দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এ ব্যাপারে সন্দীপ ছেত্রী নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার কুনাল অগ্রবাল বলেন, “খুনের ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের খোঁজ চলছে।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে অভিযুক্তেরা সকলেই ওয়াদেংয়ের ঘনিষ্ঠ।
|
নিহত ওয়াংদেও।
—নিজস্ব চিত্র। |
মোর্চা সূত্রের খবর, পেশায় ছোট মাপের ঠিকাদার নিহত ওই যুবক ভুটিয়াবস্তি এলাকার যুব মোর্চা সহ-সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি, মোর্চার ইউনিট সম্পাদকও ছিলেন। এই খুনের ঘটনার পেছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে তা দ্রুত খুঁজে বার করার জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক তথা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) সদস্য রোশন গিরি বলেন, “পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাড়ি থেকে ওই নেতাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। কী কারণে খুন তা পুলিশকে দ্রুত প্রকাশ্যে আনতে বলা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুটিয়াবস্তি এলাকায় দীর্ঘদিনের বাসিন্দা ওয়াংদে গত কয়েক বছর ধরে নির্মাণ সংস্থার কাজ করতেন। পাঁচ বন্ধু মিলেই একযোগে কাজ করতেন। সকলেই এলাকায় যুব মোর্চার সদস্য হিসাবে পরিচিত। গত জিটিও ভোটে প্রত্যেকেই সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। প্রতিদিনই কাজের পর এলাকার কোনও কোনও বন্ধুর বাড়িতে পানভোজনের আসরে পাঁচজন মিলিত হতেন। নিহতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় বন্ধু সন্দীপ ছেত্রীর বাড়িতে যাচ্ছি বলে ওয়াংদে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন ভেবেছিলেন ওয়াংদে বন্ধুর বাড়িতেই থেকে গিয়েছেন। এদিন সাত সকালে ভুটিয়াবস্তি লাগোয়া একটি নির্জন রাস্তার পাশেই নিহতের মাথা থেঁতলানো দেহটি দেখেন কয়েকজন বাসিন্দা। তার পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, সম্ভবত পানভোজনের আসরে নির্মাণ কাজের কোনও বরাত বা টাকার অংশ নিয়ে গোলামাল হয়। সেখানেই ওয়াংদের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। ওই বাড়িটি থেকে লোহার রডটি উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের মধ্যেই ওই যুব নেতাকে খুন করা হয়। তার পরে অন্ধকারে দেহটি বাইরে নিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। পানভোজনের আসর ওই ঘরেই বসেছিল তার প্রমাণ মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। সকালে নিহতের বাকি চার বন্ধুর খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে।
|