অজানা জ্বরে শনিবার দুই শিশু-সহ চার জনের মৃত্যু হল কুমারগঞ্জে। জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ৭০ জন। স্থানীয় সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের এক সপ্তাহ আগে থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের মোহনা, ডাঙা, সমজিয়া, ভোঁওরের বিস্তীর্ণ এলাকায় জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্লক স্তরে চিকিৎসক দল পাঠিয়ে কেবল মাত্র মোহনা এলাকার মুগলিশপুর গ্রামে গিয়ে জ্বর কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। সে সময় কয়েকজনের রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে কোনও কিছু জানা যায়নি। ফলে আক্রান্ত গ্রামগুলির অধিকাংশ বাসিন্দাই হাতুড়েদের উপর ভরসা করে নিজেদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু শনিবার পরপর চারজনের মৃত্যুর খবর জেলা সদরে পৌঁছতেই নড়চড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কাজল মণ্ডল বলেন, “তিন জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। চিকিৎসক দল পাঠানো হয়েছে। বালুরঘাট হাসপাতালে বেশ কয়েকজন ভর্তি হয়েছেন। রোগের কারণ জানতে ১৫ জনের রক্তের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” তাঁর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর সফরে জন্য ব্যস্ত ছিলাম। তার মধ্যেই কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অজানা জ্বরের আক্রান্ত রোগীদের খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেছি। মুগলিশপুরে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বুধবার ও শুক্রবার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সমজিয়ার কুতুবপুরের মুন্না আজিজ সরকার (৬) এবং ভোঁওর অঞ্চলের নারায়ণপুর গ্রামের জাহিদ মণ্ডল (৯) মারা যান। গত বৃহস্পতিবার রাতে বরাহার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মারা যান ডাঙ্গা অঞ্চলের জন্তিহারের বাসিন্দা সইফুল মণ্ডল (২২)। এই তিন জনের পাশাপাশি, ভোঁওরের নারায়ণপুরের বাসিন্দা অয়নদীপ বক্সি (১৫) কয়েকদিন আগেই কলকাতায় মারা যান বলে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হরেকিঙ্কর রায় জানিয়েছেন। এ দিনই কুমারগঞ্জের বরাহার ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জ্বরে আক্রান্ত ৮ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে। জ্বরে আক্রান্তদের অনেকে আবার বর্হিবিভাগে লাইন দিয়ে ওষুধ নিয়ে গিয়েছেন। শনিবার কুমারগঞ্জ ব্লকের অজানা জ্বরে আক্রান্ত এলাকা ঘুরে ডেপুটি সিএমওএইচ (২) গৌরব রায় বলেন, “বাইরের এলাকা থেকে জ্বর নিয়ে বাসিন্দারা বাড়ি ফিরছেন কি না তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। উপসর্গ দেখে জাপানি এনকেফেলাইটিস বা মেনেনজাইটিস বলে মনে হচ্ছে।” অন্য দিকে, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “ওই রোগীদের ডেঙ্গি, চিকেন গুনিয়া বা এনকেফেলাইটিস হতে পারে। তবে রক্তের পরীক্ষার রিপোর্ট না পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে না।” |