এক কিশোরী রোগিণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ‘ভাঙচুর’ চালানো হল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের সুপারের অফিসে। শনিবার সকালের ঘটনা। বীরভূমের বোলপুর হাসপাতালেও ওয়ার্ড মাস্টারের অফিসে এ দিন এক রোগীর বাড়ির লোকজন ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। দু’টি ক্ষেত্রেই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার তেঁতুলপোহা গ্রামের রিম্পা অধিকারীকে (১৬) পেট ব্যথার জন্য রবিবার বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। তার অস্ত্রোপচারও হয়। কিন্তু বুধবার থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। পরে ধরা পড়ে সে ডেঙ্গি-আক্রান্ত। শুক্রবার রাতে হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়। শনিবার সকাল ৮টায় দুই যুবক হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডুর অফিসে ঢুকে ওই মৃত্যু নিয়ে হইচই শুরু করে। সুপার তখন অফিসে ছিলেন না। ওই যুবকেরা সামনে এক কর্মীকে পেয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। ‘মার খান’ সুধাংশু চক্রবর্তী নামে এক ওয়ার্ড মাস্টারও। এর পরে ‘ভাঙচুর’ চালানো হয় সুপারের অফিসে। গোলমালের শব্দ শুনে পাশের ঘর থেকে নার্সিং সুপার দীপালি নাগ সেখানে গেলে তাঁকেও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। দীপালিদেবীর কথায়, “সুপারের ঘরে ঢুকে দেখি, দু’জন লোক চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করছে! কম্পিউটারের মনিটরটাকে মেঝেয় ফেলে দিল। হুজ্জতি করতে নিষেধ করায় উল্টে ওরা আমাকে নিগ্রহ করে।” এর পরে আরও নার্স সেখানে গেলে ‘হামলাকারী’রা চম্পট দেয়। |
বাঁকুড়ায় তছনছ সুপারের ঘর। ছবি: অভিজিৎ সিংহ। |
হাসপাতাল সুপার পরে বাঁকুড়া সদর থানায় ওই দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সুপারের দাবি, “অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িত। আগেও সে কোনও না কোনও অজুহাত তুলে ঝামেলা পাকিয়েছে। রোগীর আত্মীয়দেরও গণ্ডগোল করার জন্য প্ররোচনা দেয়। অন্য জনের পরিচয় জানি না। দু’জনের বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে জানিয়েছি।” তিনি জানান, রিম্পা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল। ‘যথাসাধ্য’ চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। মৃতার মামা প্রমোদ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, “কারা হামলা চালিয়েছে, জানি না।”
এ দিন দুপুরে বোলপুর হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টারের অফিসে রোগিণীর ‘বিল’ মেটানো নিয়ে গোলমালের জেরে ভাঙচুর হয়। অভিযোগ, জনা সাতেক লোক ওই অফিসে ঢুকে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয়। পরে রোগিণীর বাড়ির লোকেরা সুপারের কাছে মুচলেকা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। হাসপাতাল সুপার সুদীপ মণ্ডল বলেন, “সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা ও কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছি। রোগিণীর বাড়ির লোকজন লিখিত ভাবে ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।” |