পশ্চিমবঙ্গে এইমস ধাঁচের হাসপাতাল গড়া নিয়ে রাজনৈতিক জটিলতার দ্রুত নিষ্পত্তি চান প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউপিএ শীর্ষ নেতৃত্ব চান না, তৃণমূলের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য বাড়ুক। তাই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদকে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন বিষয়টির সমাধান করতে। খুব শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে তাঁরই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন গুলাম নবি।
পশ্চিমবঙ্গে কোথায় হবে এইমস ধাঁচের হাসপাতাল? রায়গঞ্জ না কল্যাণী? দীর্ঘদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে টানাপোড়েন চলছে কংগ্রেস-তৃণমূলে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির উদ্যোগে উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জে এইমস তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে রাজ্য সরকার যুক্তি দেয়, রায়গঞ্জে জমির অভাব আছে। এবং সরকার অনিচ্ছুকদের থেকে জমি নেবে না। তখনই কল্যাণীতে হাসপাতাল গড়ার কথা বলা হয় সরকারের তরফে। সরকারের যুক্তি, সেখানে ইতিমধ্যেই হাসপাতাল গড়ার মতো প্রয়োজনীয় জমি রয়েছে। তা ছাড়া এটি কলকাতার কাছে। ফলে এইমস ধাঁচের হাসপাতাল তৈরি হলে তার সামগ্রিক পরিকাঠামো সংক্রান্ত সুবিধাগুলি
কলকাতা থেকে পাওয়া যাবে। কিন্তু এই যুক্তি মানতে নারাজ প্রিয়বাবুর স্ত্রী তথা রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি এবং স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, রায়গঞ্জে হাসপাতাল গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় জমি দেখার প্রাথমিক কাজ অনেক দিন আগেই হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় কৃষকরাও জমি দিতে প্রস্তুত। অনিচ্ছুক কষকদের যে যুক্তি রাজ্য সরকার দিচ্ছে, তা ভিত্তিহীন, অভিযোগ তাঁদের। একই সঙ্গে কংগ্রেস মনে করে, যে হেতু মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত হয়েছে রায়গঞ্জে এইমস
গড়ার ব্যাপারে, তাই সেখানেই হাসপাতালটি গড়া হোক। বস্তুত নিজেদের শক্ত ঘাঁটি উত্তরবঙ্গে এইমস গড়ার দাবি ছাড়তে নারাজ কংগ্রেস।
এই টানাপোড়েনের মধ্যেই সম্প্রতি গুলাম নবি আজাদকে চিঠি দেন সুদীপ। তাতে রাজ্য সরকারের বক্তব্য বিশদে উল্লেখ করে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন, কল্যাণীতেই হাসপাতালটি হোক। সুদীপবাবুর কথায়, “উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত হোক সেটা আমরাও চাই না। কল্যাণীর পরেও সেখানে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়া যেতে পারে।” |