প্রায় বাইশ বছর আগে তাঁর কাকার বলে আউট হয়েছিলেন তিনি। আজ সেই জন ব্রেসওয়েলের ভাইপো ডাগ ব্রেসওয়েলের বলে শুধু সচিন তেন্ডুলকরের স্টাম্পই ছিটকে যায়নি, ভারতীয় ক্রিকেটে সাড়া ফেলে দেওয়া এক বিতর্কও তৈরি হয়ে গেল। এক কিংবদন্তিকে ঘিরে বিতর্ক জন্ম দেওয়ার পিছনে রয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের আর এক কিংবদন্তি। সুনীল গাওস্কর।
চিন্নাস্বামীতে বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ সচিনের স্টাম্প ছিটকে যাওয়ার পরই টিভি-তে ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে সুনীল গাওস্কর বলেন, “বয়সের ভারেই সচিনের ফুটওয়ার্ক মন্থর হয়ে গিয়েছে।” এই বোমা ফাটিয়েই গাওস্করের পরবর্তী পর্যবেক্ষণ: “ব্যাট আর প্যাডের ফাঁক দিয়ে সচিনের মতো গ্রেট ব্যাটসম্যান পর পর দু’টো টেস্টে বোল্ড হচ্ছে। এটা মোটেই ব্যাটসম্যানের জন্য ভাল দৃশ্য নয়।” |
গাওস্করের এই মন্তব্যের পরই দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারকেই অবশ্য গাওস্করের সঙ্গে একমত হতে দেখা যায়নি। গাওস্করের জমানারই এক প্রাক্তন ক্রিকেটার, সৈয়দ কিরমানি যেমন তাঁর অধিনায়কের উল্টো পথে হেঁটেছেন। কিরির প্রতিক্রিয়া: “সচিনের এই আউট নিয়ে গাওস্করের এ রকম মন্তব্য করা উচিত হয়নি।” আবার গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সচিনের ফুটওয়ার্ক নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। ভিশি বরং মনে করেন, সচিনের এ দিন শট নির্বাচনে ভুল হয়েছিল। “বলটা সচিনের শরীরে চলে এসেছিল। না খেলে ওর উপায় ছিল না। কিন্তু সচিন যদি মিড উইকেটে খেলার বদলে বলটা মিড অনে খেলার চেষ্টা করত, তা হলে হয়তো আউট হত না,” বলেছেন বিশ্বনাথ। এ দিন চিন্নাস্বামীতে থাকা আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার রবি শাস্ত্রী অবশ্য এই বিতর্ক থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। তাঁকে ফোনে ধরা হলে শাস্ত্রী বলেন, “আমি স্টুডিওয় রয়েছি। এ নিয়ে কিছু বলব না।”
তবে সচিনের ফুটওয়ার্কের সমস্যা কিন্তু আগেই দেখতে পেয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের এক কিংবদন্তি। ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজে নিল হার্ভে আনন্দবাজারকে পরিষ্কার বলেছিলেন, “সচিনের ফুটওয়ার্কের দ্রুততা কমে আসছে। সে জন্য ওর ফাস্টার বোলারদের খেলতে সমস্যা হচ্ছে।” এ দিন সঞ্জয় মঞ্জরেকরও ছিলেন কমেন্ট্রি বক্সে। এবং সচিনের আউটের ধরনে একেবারেই খুশি হননি এক সময়কার টেকনিক্যালি নিখুঁত এই ব্যাটসম্যান। তাঁর কথায়, “সচিন তো এ ভাবে সাধারণত বোল্ড হয় না।”
প্রায় নিরুত্তাপ ভারত-নিউজিল্যান্ড সিরিজ শনিবারের বারবেলার পরে হঠাৎ করে চলে এসেছে জাতীয় মিডিয়ার সার্চলাইটে। এবং চলে আসার পিছনে রয়েছে এক অভূতপর্ব ক্যাচলাইন: সচিন বনাম গাওস্কর।
|
শেষ দশ টেস্টে সচিন |
বোল্ড ৪ (বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, সিডনি, মেলবোর্ন)
এল বি ডব্লিউ ৫ (পারথ দু’ইনিংসে, দিল্লি দু’ইনিংসে, ওভাল)
ক্যাচ ৮ (অ্যাডিলেডে দু’ইনিংসে, সিডনি, মেলবোর্ন, মুম্বই দু’ইনিংসে, কলকাতা, ওভাল) |
|