নতুন বলের চোখ রাঙানি সামলে টানছেন কোহলি
হেন্দ্র সিংহ ধোনির কপাল ভাল। শনিবার অন্তত কোচ ডানকান ফ্লেচারের বকুনি বা বোর্ডের শাসানি, কোনওটাই তাঁকে হজম করতে হল না। যদিও চিন্নাস্বামীর দুপুর পর্যন্ত দু’টোরই ভাল সম্ভাবনা ছিল। সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা, ঘরের মাঠেও নতুন বল সামলাতে তারকাখচিত টপ অর্ডারের (সামান্য ব্যতিক্রম সহবাগ) হামাগুড়ি খাওয়াএ সব নিয়ে প্রশ্ন ওঠারই কথা। লাঞ্চের কিছুক্ষণের মধ্যে ৮০-৪! তবু ধোনি ‘বেঁচে’ গেলেন। তাঁর হাতে একটা বিরাট কোহলি ছিল বলে।
নতুন বলে কিউয়ি পেসারদের সুইংয়ের বিষ বিরাটকে গিলতে হয়নি, ঠিক। কিন্তু তাতে কৃতিত্ব কতটা কমে? ঘাড়ের উপর চাপের এভারেস্ট সামলে দিনের শেষে বিরাট ৯৩ ব্যাটিং। মুমূর্ষু ভারতীয় ব্যাটিংকে ‘আইসিসিইউ’ থেকে ‘জেনারেল বেড’-এ নিয়ে এলেন। রায়না আর অপরাজিত অধিনায়ককে সঙ্গে নিয়ে। ভারত এখনও ৮২ রানে পিছিয়ে, ম্যাচের ‘কন্ট্রোল রুমে’ ঢুকে পড়তে হলে কাল অন্তত দু’টো সেশন ব্যাট করা দরকার ধোনিদের। কিন্তু বিরাট না থাকলে এই প্রেক্ষাপটটাই তৈরি হয় না।
ফিল্ডার বিরাটের সঙ্গে মানুষ বিরাটের মিল আছে। দু’টো লোকই একই রকম আগ্রাসী, মেজাজি। কিন্তু ব্যাটসম্যান বিরাট দরকারে ক্রিকেটের ‘ওল্ড স্কুল’-এর ছাত্র। যিনি নেমে ‘ভি’-এর মধ্যে খেলবেন। যাঁকে দেখে ভরসা হবে। এ দিন যা হল। যখন নেমেছিলেন, স্কোরবোর্ডে ৬৭-৩। সহবাগ, পূজারা, গম্ভীরকেউ নেই। একটু পর সচিনও বিশ্রী ভাবে বোল্ড। দেখেশুনে বিরাট ফার্স্ট গিয়ারে চলে গেলেন। প্রথম বাউন্ডারি এল ২১ বলে! কিন্তু অসহ্য ঠুকঠুকও নয়। কাট, পুল, স্ট্রেট ড্রাইভও বেরিয়েছে, কিন্তু সময়-সুযোগ বুঝে। খারাপ বলের অপেক্ষায় থেকে। রায়নার, “বিরাট ছাড়া আমরা এখানে পৌঁছতাম না,” কথাটা নেহাত কথার কথা নয়।
কিন্তু কাঁটার খচখচানি যে থেকেই যাচ্ছে। সিরিজের দু’টো টেস্টেই দেখা গেল, নতুন বলে কিউয়ি পেসারদের মুখে পড়ে সিনিয়রদের ঠকঠকানি, মান বাঁচাতে ভরসা জুনিয়রদের জুটি। উপ্পলে পূজারা-কোহলি, চিন্নাস্বামীতে কোহলি-রায়না। সহবাগের খোঁচা বার পাঁচেক স্লিপ-গালিতে উড়ে গেল, অন-এ লোপ্পা পেতে শর্ট মিড উইকেট ফিল্ডার দাঁড় করালেন টেলর, সহবাগ দেখেও দেখলেন না। এবং ওই জায়গাতেই ‘মৃত্যু’। সকালের ‘বন্ধু’ পরিবেশের ফায়দা তুলে বল অবিশ্বাস্য ‘মুভ’ করাচ্ছিলেন টিম সাউদি, আর গম্ভীরকে দেখে মনে হল চিন্নাস্বামী নয় তাঁকে লর্ডসে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে! অফস্টাম্প বরাবর সাউদির বল নিশ্চিন্তে ছাড়তে গেলেন, বল সোজা ঢুকে তাঁর বেল-কে ছোট্ট টোকায় ফেলে দিল! সচিন বোধহয় নিজেও শনিবারের চিন্নাস্বামীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভুলতে চাইবেন। ব্যাটের সুইং আর প্যাডের ফাঁক খুঁজে ব্রেসওয়েলের ইনসুইং ‘ক্রিকেটের ভগবানে’র মিডল স্টাম্প ফেলে দিল! বোল্ড হওয়ার ধরণ এতটাই দৃষ্টিকটু যে, সুনীল গাওস্করকেও কমেন্ট্রি বক্সে বসে বলতে হল, “বয়স সচিনের ফুটওয়ার্ক মন্থর করে দিয়েছে!” এর পরে এ দিনের শুরুর পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে কিউয়িদের ব্যাটিং লেজ গুটিয়ে দেওয়ার কাহিনি, প্রজ্ঞান ওঝার পাঁচ উইকেট এমনকী কোহলির বিরাট ব্যাটিংও কেমন যেন অদ্ভুতুড়ে লাগছে!
শনিবারের চিন্নাস্বামী যে জাতীয় বিতর্কই লাগিয়ে দিল!

স্কোর

নিউজিল্যান্ড
প্রথম ইনিংস (আগের দিন ৩২৮-৬)
ফান উইক ক রায়না বো জাহির ৭১,
ব্রেসওয়েল রান আউট ৪৩,
সাউদি এলবিডব্লিউ ওঝা ১৪,
পটেল ক গম্ভীর বো উমেশ ০,
বোল্ট নঃআঃ ২,
অতিরিক্ত ১১,
মোট ৩৬৫।
পতন: ০, ৬৩, ৮৯, ১৯৬, ২১৫, ২৪৬, ৩৪৫, ৩৫৩, ৩৫৩।
বোলিং: ওঝা ২৮.১-১০-৯৯-৫, জাহির ২২-২-৮৩-২,
উমেশ ১৬-১-৯০-১, অশ্বিন ২৪-৫-৮২-১।

ভারত
প্রথম ইনিংস
গম্ভীর বো সাউদি ২,
সহবাগ ক ফ্লিন বো ব্রেসওয়েল ৪৩,
পূজারা ক বোল্ট বো সাউদি ৯,
সচিন বো ব্রেসওয়েল ১৭,
কোহলি ব্যাটিং ৯৩,
রায়না ক ফান উইক বো সাউদি ৫৫,
ধোনি ব্যাটিং ৪৬,
অতিরিক্ত ১৮,
মোট ২৮৩-৫।
পতন: ৫, ২৭, ৬৭, ৮০, ১৭৯।
বোলিং: বোল্ট ১৯-২-৭৫-০, সাউদি ১৫-৪-৩৫-৩, ব্রেসওয়েল ১৫-৪-৬৬-২,
ফ্র্যাঙ্কলিন ১০-৪-১৭-০, পটেল ১৯-৫-৭৮-০।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.