নার্স পূজা শইকিয়াকে খুন করেছে তাঁর ছেলেই। স্রেফ ঈর্ষা ও অর্থের লোভে, ঠান্ডা মাথায় এই খুন।
গত ২৯ অগস্ট রাতে গুয়াহাটির তরুণ নগরের একটি বাড়ির দরজা ভেঙে ৪২ বছরের পূজা শইকিয়ার দেহ উদ্ধার করা হয়। বাড়ির মালিক ডি এন পাঠক পুণেতে কর্মরত। গত ১৫ বছর ধরে বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের ভার ছিল পূজাদেবীর উপরেই। তিনি খ্রিষ্টান বস্তি এলাকার একটি হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন। নিজের বাড়িও ছিল ওই বস্তিতে। ছেলের নাম অঙ্কিত, মেয়ে অঙ্কিতা। ১৯ বছরের অঙ্কিত এস বি দেওরা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ জানতে পারে, হাসপাতালে রাত ডিউটি সেরে ২৮ অগস্ট ভোরে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। পড়শিরা জানান, তার পর থেকে তিনি আর বাইরে বের হননি। ২৯ অগস্ট তাঁর ভাই দিদিকে ফোনে না পেয়ে রাতে ওই বাড়িতে হাজির হন। দরজা ভেঙে দেখা যায় পূজাদেবী মৃত অবস্থায় পড়ে। দেহে পচনও ধরেছে। খুনের পিছনে জমি মাফিয়াদের হাত থাকতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে মনে করেছিল। কিন্তু দেখা যায় পূজাদেবী মারা যাওয়ার পরেই তাঁর এটিএম কার্ডটি ব্যবহার করে ১১ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। অথচ কার্ডটি ঘরেই ছিল। এর পরেই পুলিশের সন্দেহ হয় মৃতার খুব কাছের লোকই এই ঘটনায় জড়িত।
কামরূপ মহানগরের এসএসপি এ পি তিওয়ারি জানান, কার্ডটি ব্যবহার করে কোন এটিএম থেকে টাকা তোলা হয়েছে পুলিশ ব্যাঙ্কের সহায়তায় তা জানতে পারে। সেই এটিএম-এর সি সি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, পূজাদেবীর ছেলে অঙ্কিতই টাকা তুলছে। তাকে জেরা শুরু করলে তার কথায় অসঙ্গতি মেলে। শেষে পুলিশের জেরায় অঙ্কিত স্বীকার করে, সে-ই মাকে হত্যা করেছে।
কেন এমন করল সে? পুলিশকে অঙ্কিত জানিয়েছে মা তাকে পছন্দ করতেন না। টাকাও দিত না। তাই টাকার লোভে ও মায়ের উপরে রাগ থেকেই মাকে খুনের পরিকল্পনা করে অঙ্কিত। সে জানায়, ২৮ অগস্ট সকালে মাকে নিয়ে তরুণ নগরের বাড়িতে যায় সে। মাকে অংকিত বলে, বিশেষ উপহারের চমক দিতে চায়। তাই চোখ বেঁধে দেবে। ছেলের কথা বিশ্বাস করেন পূজাদেবী। চোখ বাঁধার পরেই মায়ের হাতও পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলে সে। এর পর দড়ি দিয়েই মায়ের গলা পেঁচিয়ে, শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। অঙ্কিতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বন্ধু, দশম শ্রেণীর ছাত্র রঞ্জিৎ গৌড়কেও আটক করা হয়েছে। |